এবার কলকাতা বইমেলায় অষ্টম প্রকাশে ‘নাপৃথিবী’র প্রয়াস ‘নিঝুম রাতে, তাহারা’। পাঁচ উপন্যাসের সমাহার।
এবার ‘নাপৃথিবী’র শিরোনাম ‘নিঝুম রাতে, তাহারা’। নামের মধ্যেই রয়েছে রহস্য। এবারও থাকছে পাঁচটি উপন্যাস। লিখেছেন যথাক্রমে উপমন্যু রায়, সর্বাণী (মুখোপাধ্যায়), অজয়কুমার বাগ, সঞ্জীব দাস এবং সম্পাদক স্মৃতিকণা রায় নিজে। কখনও অতিপ্রাকৃত রহস্য, কখনও বা ভিনগ্রহের প্রাণীরা জমিয়ে দিয়েছে উপন্যাসগুলির কাহিনি।
বইটির প্রথম উপন্যাসটি লিখেছেন উপমন্যু। নাম ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’। সন্দেহ নেই উপন্যাসের নামটাই অদ্ভুত। উল্লেখ্য, ‘নাপৃথিবী’ বইতেই ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হচ্ছে উপমন্যুর অরণ্য সিরিজ। অর্থাৎ, কাহিনির মূল চরিত্র অরণ্য, তুহিন এবং জেনি। ‘নাপৃথিবী’র প্রথম বছর থেকেই এই সিরিজ লিখছেন উপমন্যু। এবার সেই সিরিজেরই অষ্টম উপন্যাস এটি। এবারও অতিপ্রাকৃত রহস্য এবং ভিনগ্রহের বাসিন্দা জেনিকে নিয়ে অন্য রকম কাহিনি লিখেছেন তিনি।
বইটির দ্বিতীয় উপন্যাস স্মৃতিকণা রায়ের। তাঁর উপন্যাসের নাম ‘নিঝুম রাতে, তাহারা’। অন্য কয়েক বছরের মতো এবারও তাঁর উপন্যাসের নামেই বইটির নামকরণ করা হয়েছে। স্মৃতিকণার উপন্যাসেও অতিপ্রাকৃতি রহস্য এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর উপস্থিতি অদ্ভুত এক রহস্য তৈরি করেছে। লেখকের স্বভাবসিদ্ধ রীতি অনুযায়ী এই উপন্যাসেও রয়েছে অসংখ্য চরিত্র। সেই চরিত্রগুলি মিলেমিশে তৈরি করেছে জীবনযাপনের এক নিখুঁত ছবি। পাঠকদের মুগ্ধ করে রাখবে জটিল কাহিনিকে লেখকের সহজ ভাবে বলার মুন্সিয়ানা।
অজয়কুমার বাগ লিখেছেন এই বইয়ের তৃতীয় উপন্যাস। নাম ‘আঁধার পেরিয়ে’। ভৌতিক ঘটনা কী ভাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে এলোমেলো ও বিভ্রান্ত করে দেয়, তারই স্পষ্ট ছবি অজয় এঁকেছেন তাঁর উপন্যাসটিতে। গত বছর এই বইতে অজয়ের লেখা ‘এখনও আঁধার’ প্রকাশিত হয়েছিল। সেদিক থেকে বলা যায়, সেই উপন্যাসেরই পরবর্তী কাহিনি এই উপন্যাস। অর্থাৎ, অজয়ও ‘নাপৃথিবী’তে একটি সিরিজ তৈরি করছেন তাঁর লেখা উপন্যাসগুলির মাধ্যমে। পাঠকরা তাঁর গল্প বলার গুনে মুগ্ধ হতেই পারেন।
বইটির চতুর্থ উপন্যাস ‘অলৌকিক নীলা’। সম্পূর্ণ অতিপ্রাকৃত কাহিনি। লেখক সর্বাণী (মুখোপাধ্যায়)। ‘নাপৃথিবী’ পাঠকদের কাছে সর্বাণী নামটি অপরিচিত নয়। অত্যন্ত সরল ভাবে উপন্যাসটি লিখেছেন ইতিহাসের এই গবেষক। বরাবরই তাঁর উপন্যাসে ইতিহাসের ছোঁয়া থাকে। এই উপন্যাসও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সরাসরি ইতিহাস আশ্রয়ী নয় এই উপন্যাস। বরং ইতিহাসের একটা সময়কে ধরে কাল্পনিক চরিত্র দিয়ে ভৌতিক কাহিনি লিখেছেন তিনি। পাঠককে কাহিনির শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে এই উপন্যাস।
বইটির শেষ উপন্যাস তরুণ লেখক সঞ্জীব দাসের। উপন্যাসের নাম ‘অন্নপ্রাশনের নিমন্ত্রণে ভয় লাগে’। কয়েক বছর ধরে ‘নাপৃথিবী’তে উপন্যাস লিখছেন সঞ্জীব। এবার তাঁর উপন্যাসে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে তন্ত্রমন্ত্র। সেই সঙ্গে তন্ত্রমন্ত্রের পিছনে যে ঘটনা ও ইতিহাস রয়েছে, সে কথাও এই উপন্যাসে উল্লেখ করেছেন সঞ্জীব। উপন্যাসের কাহিনি যেমন পাঠকদের ভালো লাগবে, তেমনই তন্ত্রমন্ত্র নিয়ে উপন্যাসে যে ইতিহাস ও ঘটনাগুলোর কথা তিনি লিখেছেন, তা পাঠককে সমৃদ্ধও করবে।
সব মিলিয়ে এবারও অতিপ্রাকৃত, তন্ত্রবিদ্যা এবং ভিনগ্রহের প্রাণীদের উপস্থিতিতে ‘নাপৃথিবী’ জমজমাট অবস্থায় আসছে কলকাতা বইমেলায়। সম্পাদনায় যথারীতি স্মৃতিকণা রায় নিজের দক্ষতার প্রমাণ রেখেছেন। ‘নাপৃথিবী’ প্রকাশনার এবারের বইটির দাম ৩০০ টাকা।
নাপৃথিবী : নিঝুম রাতে, তাহারা
সম্পাদক স্মৃতিকণা রায়
মূল্য ৩০০ টাকা
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন