পাঠিকার পরামর্শ শুনে হাঁ লেখিকা দেবারতি। কী এমন ঘটল?

এমন সময় সেই বয়স্ক পাঠিকা দেবারতিকে ‘মা’ সম্বোধন করে অতি স্নেহের সঙ্গেই জিজ্ঞাসা করেন,  “এখন কেমন আছ?” দেবারতি হেসেই বলেন, “আগের চেয়ে ভাল আছি...। আর তারপরেই...

পাঠিকার পরামর্শ শুনে হাঁ লেখিকা দেবারতি। কী এমন ঘটল?

বইমেলার স্টলে বসে গুনমুগ্ধ পাঠকের অনুরোধে নিজেরই বইয়ে সই দিচ্ছিলেন লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ‌্যায় (Debarati Mukherjee)। দীর্ঘ লাইন সই নিতে। তারমধ্যেই এক  বয়স্ক পাঠিকার স্বতঃপ্রণোদিত পরামর্শে যেন আকাশ থেকে পড়লেন লেখিকা। রেগে যাননি, বরং মজাই পেয়েছেন, পরে নিজের সেই অভিজ্ঞতা পাঠকদের সঙ্গে ভাগও করে নিয়েছেন দেবারতি।

কী ঘটেছিল ওই দিন?

দেবারতির নিজের কথায়, কলকাতা বইমেলায় শনিবার তিনি কিছু সময়ের জন‌্য একটি স্টলে গিয়েছিলেন। খবর পেয়েই দেবারতির ভক্তরা তাঁর লেখা নতুন বই হাতে সই করে দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে হাজির হয়। ক্রমে স্টলের বাইরেও লাইন দীর্ঘ হয়। উল্লেখ‌্য, কিছুদিন আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন দেবারতি। সে কথাও নিজেই জানিয়েছিলেন সোশ‌্যাল মিডিয়ায়। কাজেই এদিন তাঁর সই নিতে আসা পাঠকরা তাঁর স্বাস্থে‌্যর কথা জানতে চাইছিলেন। তিনিও হেসে জানাচ্ছিলেন, “আগের চেয়ে ভাল, তবে এখনো …!” ইত্যাদি ইত্যাদি। 

এমনসময় সেই বয়স্ক পাঠিকা দেবারতিকে ‘মা’ সম্বোধন করে অতি স্নেহের সঙ্গেই জিজ্ঞাসা করেন,  “এখন কেমন আছ?” দেবারতি হেসেই বলেন, “আগের চেয়ে ভাল আছি, তবে এখনো সমস্যা আছে মাসিমা। আপনি কেমন আছেন?” আর দুয়েকটা কথার পরেই চমকে দেওয়া সেই পরামর্শ। পাঠিকা বলেন, “ “শুনেছি, তুমি বড্ড ওসব খাও। ওসব থেকেই তোমার এই বিদঘুটে রোগটা হয়েছে নির্ঘাত। খেও না বাবা, এতটুকু বয়স, কতদিন সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকতে হবে, আমাদের জন্য কত ভাল ভাল লিখতে হবে! ওসব খেয়ে কেউ শরীর খারাপ করে?”

বাঙালি পরিবার ‘ওসব’ খাওয়ার অর্থ বিলকুল বোঝে। তবে, ওই পরিস্থিতিতে দেবারতি মনে করেন, তাঁর প্রিয় পাঠক তাঁকে বাইরের খাবার বা ফার্স্ট ফুড খেতে বারন করছেন। বিষয়টি খোলসা করতে যেতেই থামিয়ে দিয়ে সেই পাঠিকা বলেন, “শুনেছি তুমি খুব ড্রিংক করো। ওসব ছাইপাঁশ খেয়ো না মা আমার, বুঝলে? এই কথাখানা বলতে এতদূর এলাম।”

কথা শুনে দেবারতির মুখ হাঁ।

খ‌্যাতির বিড়ম্বনা! কিংবা হাওয়ার চেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া গুজব।

গত অক্টোবরের শেষ নাগাদ  বিরল জিবি সিন্ড্রোমের শিকার হন দেবারতি। যার পুরো নাম গুলিয়ান ব্যারি সিন্ড্রোম, সারা শরীর অবশ হয়ে আসা এই কঠিন অসুখের প্রাথমিক উপসর্গ, যা ধীরে ধীরে মাল্টি অর্গান ফেলইয়োরের দিকে এগোয়। পুজোর পর থেকেই প্রাথমিক সমস্যা শুরু হয়েছিল লেখিকার। তাঁকে ৭ দিন ভেন্টিলেশনেও থাকতে হয়। লেখিকা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, এই অসুখটা ভ্যাক্সিন থেকেও হয়, আবার ঠিকমত কুক না করা বাইরের চিকেন থেকেও হতে পারে!”

দেবারতি বলছেন,  বত্রিশ বছর বয়স হল, সিগারেট মদ বিড়ি গুটখা কিচ্ছু কোনদিন খাইনি ( মানে খেতে অখাদ্য বলেই খাইনি), নাইট ক্লাবে যাইনি, ডিস্কে যাইনি, এক কথায়, আমি হলাম সেই আগেকার দিনের অঞ্জন চৌধুরীর সিনেমায় দেখানো বিশুদ্ধ ‘ভাল মেয়ে’। ( এগুলো খেলেই খারাপ, না খেলেই ভাল তা একেবারেই নয়, আমি কনভেনশনাল সংজ্ঞায় মজা করলাম ) তাই এহেন গুজব শুনে আমার মিষ্টি, থাম্বস আপ, ফাস্ট ফুড আর বিরিয়ানি খেয়ে খেয়ে সযত্নে বানানো ভুঁড়িটা চমকে ওঠে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন