বিশ্বব্যাপী ৭,৩৫৯ জনের বেশি প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে শীর্ষস্থান জয় করেছেন মুম্বইয়ের লেখিকা সঞ্জনা ঠাকুর।
বইতন্ত্র : জন্ম মুম্বইয়ে। অথচ তাঁর ২৬ বছরের জীবন কেটেছ সেই সব দেশে, যা তাঁর নিজের দেশ নয়। মুম্বই থেকে সাড়ে ১৪ হাজার কিমি দূরে অস্টিনে বসে আরবসাগর তীরের মোহিনী শহরের দিনযাপন লিখে সেই সঞ্জনা ঠাকুর (Sanjana Thakur) এ বছরের ‘কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ’ (Commonwealth Short Story Prize) পেলেন তাঁর ‘ঐশ্বরিয়া রাই’ (Aishariya Rai) ছোটগল্পের জন্য। বিশ্বব্যাপী ৭,৩৫৯ জনের বেশি প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে শীর্ষস্থান পেয়েছেন সঞ্জনা। ২৭ জুন লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সাহিত্যজগতে অন্যতম বড় স্বীকৃতি ‘কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ’-এর অর্থমূল্য ৫ হাজার পাউন্ড। সঞ্জনা তৃতীয় ভারতীয় লেখক যিনি এই পুরস্কার জিতলেন। ২০১২ সালে চালু হওয়ার পর ২০১৬ সালে ভারতীয় লেখক পরাশর কুলকার্নি তাঁর ‘কাউ অ্যান্ড কোম্পানি’ এবং ২০২০ সালে কৃত্তিকা পাণ্ডে তাঁর ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান টি অ্যান্ড স্নেক’ ছোটগল্পের জন্য এই পুরস্কার জিতেছিলেন।
সঞ্জনা বর্তমানে অস্টিনের টেক্সাস ইউনিভার্সিটিতে কথাসাহিত্যে মাস্টার অফ ফাইন আর্টস করছেন। তিনি ‘একাধিক দেশে বেড়ে উঠেছেন, যা তাঁর নিজের নয়।’ তাঁর শৈশব কেটেছে মুম্বাইতে। তারপর উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য দুবাই এবং স্নাতক অধ্যয়নের জন্য বোস্টনে চলে যান। তার লেখাগুলি অ-পশ্চিমী গল্পকথন ঐতিহ্য এবং হিন্দু পুরাণ থেকে অনুপ্রাণিত। সঞ্জনা একটি প্রেস নোটে বলেছেন, “ভারত, যেখান থেকে আমি এসেছি, একই সাথে অদ্ভুত এবং পরিচিত, গ্রহণ করা এবং প্রত্যাখ্যান দুটোই রয়েছে। গল্প লেখা আমার কাছে এটা স্বীকার করার একটি উপায় যে মুম্বই এমন একটি শহর যেখানে আমি থাকলেও আমার আকাঙ্খা থাকবে শহরটি ঘিরে। লেখা মানে আমার মনে ‘স্থানটি’ পুনর্নির্মাণের একটি উপায়।”
মুম্বই শহরের পটভূমিতেই সঞ্জনার এই গল্প। শহরটি থেকে দূরে থেকে এই শহর নিয়ে আরও বেশি প্রামাণিকভাবে তিনি লিখতে পেরেছেন, বলছেন সঞ্জনা। তাঁর কথায়, “আমি আমার বর্তমান পারিপার্শ্বিকতা থেকে ছবি আঁকি। আমি আমার আশপাশের লোকজনকে পূর্ণ মনোযোগে নিরীক্ষণ করি। তারা আমার কাজের মধ্যে দিয়ে নিজেদের পথ তৈরি করে নেয়। কিন্তু আমার বর্তমান শহর (অস্টিন) যেভাবে আমাকে লিখতে সাহায্য করে তা হল এটি বোম্বে (মুম্বই) নয়। আমি যখন যেখানে থাকি তখন সেই জায়গা সম্পর্কে লিখতে আমার খুব কষ্ট হয়।”
‘ঐশ্বরিয়া রাই’ – গল্পটি আবর্তিত হয়েছে অবনী নামে একজন একাকী যুবতীকে ঘিরে, যে স্থানীয় আশ্রয়ে থাকা অন্তঃস্বত্ত্বা মায়েদের মূল্যায়ণ করে, তারা কে একজন নতুন মায়ের জন্য ভাল প্রার্থী হতে পারে। সঞ্জনার কথায়, গল্পটি মা ও কন্যাদের সম্পর্ক নিয়ে, দেহ, সৌন্দর্যের মান এবং বোম্বে স্ট্রিট ফুড সম্পর্কে… এটি সম্পর্কের টানাপোড়েন, যত্ন এবং আকাঙ্ক্ষা, বিরক্তি এবং হতাশা (সেই সম্পর্কের) সম্পর্কে।” ‘কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ’-এর জুরি চেয়ার, উগান্ডার লেখিকা জেনিফার নানসুবুগা মাকুম্বি বলেন, গল্পটি ‘আধুনিক শহুরে জীবনে আমাদের পরিবারগুলি ভেঙে যাওয়া নিয়ে কঠোর গদ্য এবং স্তবকের মতো অনুচ্ছেদে প্যাকেজ করা নৃশংস বিড়ম্বনা, বিদ্রুপ, নিন্দা এবং হাস্যরস তুলে ধরেছে। আপনি যে শহরেই থাকুন না কেন, আপনি অনিদ্রা, টলোমলো পা, প্যানিক অ্যাটাক এবং সেলিব্রিটিদের মতো সৌন্দর্যের আবেশের সেই মানসিক চাপের পরিস্থিতি চিনতে পারবেন...”
কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ হল অপ্রকাশিত ছোট গল্পের জন্য একটি বার্ষিক পুরস্কার যা কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত। পুরস্কারটি আফ্রিকা, এশিয়া কানাডা এবং ইউরোপ, ক্যারিবিয়ান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমনওয়েলথ অঞ্চলগুলির লেখকদের সাহিত্যচর্চাকে স্বীকৃতি দেয় এবং উৎসাহিত করে। আন্তর্জাতিক জুরি প্যানেল পাঁচটি অঞ্চলের প্রতিটি থেকে একজন বিচারককে নিয়ে গঠিত। প্রতি অঞ্চল থেকে একজন করে পাঁচজন বিজয়ী হবেন। একজন আঞ্চলিক বিজয়ীকে সামগ্রিক বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজের সামগ্রিক বিজয়ী পাবেন ৫ হাজার পাউন্ড, বাকি চারটি আঞ্চলিক বিজয়ী পাবেন ২৫০০ পাউন্ড। বিজয়ী ছোটগল্প ইংরেজিতে অনুবাদ হলে, অনুবাদক অতিরিক্ত পুরস্কারের অর্থ পাবেন। চূড়ান্ত নির্বাচন একটি আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেল দ্বারা বিচার করা হবে।
 |
| সঞ্জনা ঠাকুর। ছবি কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ-এর সৌজন্যে |
বইতন্ত্র : জন্ম মুম্বইয়ে। অথচ তাঁর ২৬ বছরের জীবন কেটেছ সেই সব দেশে, যা তাঁর নিজের দেশ নয়। মুম্বই থেকে সাড়ে ১৪ হাজার কিমি দূরে অস্টিনে বসে আরবসাগর তীরের মোহিনী শহরের দিনযাপন লিখে সেই সঞ্জনা ঠাকুর (Sanjana Thakur) এ বছরের ‘কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ’ (Commonwealth Short Story Prize) পেলেন তাঁর ‘ঐশ্বরিয়া রাই’ (Aishariya Rai) ছোটগল্পের জন্য। বিশ্বব্যাপী ৭,৩৫৯ জনের বেশি প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে শীর্ষস্থান পেয়েছেন সঞ্জনা। ২৭ জুন লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সাহিত্যজগতে অন্যতম বড় স্বীকৃতি ‘কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ’-এর অর্থমূল্য ৫ হাজার পাউন্ড। সঞ্জনা তৃতীয় ভারতীয় লেখক যিনি এই পুরস্কার জিতলেন। ২০১২ সালে চালু হওয়ার পর ২০১৬ সালে ভারতীয় লেখক পরাশর কুলকার্নি তাঁর ‘কাউ অ্যান্ড কোম্পানি’ এবং ২০২০ সালে কৃত্তিকা পাণ্ডে তাঁর ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান টি অ্যান্ড স্নেক’ ছোটগল্পের জন্য এই পুরস্কার জিতেছিলেন।
সঞ্জনা বর্তমানে অস্টিনের টেক্সাস ইউনিভার্সিটিতে কথাসাহিত্যে মাস্টার অফ ফাইন আর্টস করছেন। তিনি ‘একাধিক দেশে বেড়ে উঠেছেন, যা তাঁর নিজের নয়।’ তাঁর শৈশব কেটেছে মুম্বাইতে। তারপর উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য দুবাই এবং স্নাতক অধ্যয়নের জন্য বোস্টনে চলে যান। তার লেখাগুলি অ-পশ্চিমী গল্পকথন ঐতিহ্য এবং হিন্দু পুরাণ থেকে অনুপ্রাণিত। সঞ্জনা একটি প্রেস নোটে বলেছেন, “ভারত, যেখান থেকে আমি এসেছি, একই সাথে অদ্ভুত এবং পরিচিত, গ্রহণ করা এবং প্রত্যাখ্যান দুটোই রয়েছে। গল্প লেখা আমার কাছে এটা স্বীকার করার একটি উপায় যে মুম্বই এমন একটি শহর যেখানে আমি থাকলেও আমার আকাঙ্খা থাকবে শহরটি ঘিরে। লেখা মানে আমার মনে ‘স্থানটি’ পুনর্নির্মাণের একটি উপায়।”
মুম্বই শহরের পটভূমিতেই সঞ্জনার এই গল্প। শহরটি থেকে দূরে থেকে এই শহর নিয়ে আরও বেশি প্রামাণিকভাবে তিনি লিখতে পেরেছেন, বলছেন সঞ্জনা। তাঁর কথায়, “আমি আমার বর্তমান পারিপার্শ্বিকতা থেকে ছবি আঁকি। আমি আমার আশপাশের লোকজনকে পূর্ণ মনোযোগে নিরীক্ষণ করি। তারা আমার কাজের মধ্যে দিয়ে নিজেদের পথ তৈরি করে নেয়। কিন্তু আমার বর্তমান শহর (অস্টিন) যেভাবে আমাকে লিখতে সাহায্য করে তা হল এটি বোম্বে (মুম্বই) নয়। আমি যখন যেখানে থাকি তখন সেই জায়গা সম্পর্কে লিখতে আমার খুব কষ্ট হয়।”
‘ঐশ্বরিয়া রাই’ – গল্পটি আবর্তিত হয়েছে অবনী নামে একজন একাকী যুবতীকে ঘিরে, যে স্থানীয় আশ্রয়ে থাকা অন্তঃস্বত্ত্বা মায়েদের মূল্যায়ণ করে, তারা কে একজন নতুন মায়ের জন্য ভাল প্রার্থী হতে পারে। সঞ্জনার কথায়, গল্পটি মা ও কন্যাদের সম্পর্ক নিয়ে, দেহ, সৌন্দর্যের মান এবং বোম্বে স্ট্রিট ফুড সম্পর্কে… এটি সম্পর্কের টানাপোড়েন, যত্ন এবং আকাঙ্ক্ষা, বিরক্তি এবং হতাশা (সেই সম্পর্কের) সম্পর্কে।” ‘কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ’-এর জুরি চেয়ার, উগান্ডার লেখিকা জেনিফার নানসুবুগা মাকুম্বি বলেন, গল্পটি ‘আধুনিক শহুরে জীবনে আমাদের পরিবারগুলি ভেঙে যাওয়া নিয়ে কঠোর গদ্য এবং স্তবকের মতো অনুচ্ছেদে প্যাকেজ করা নৃশংস বিড়ম্বনা, বিদ্রুপ, নিন্দা এবং হাস্যরস তুলে ধরেছে। আপনি যে শহরেই থাকুন না কেন, আপনি অনিদ্রা, টলোমলো পা, প্যানিক অ্যাটাক এবং সেলিব্রিটিদের মতো সৌন্দর্যের আবেশের সেই মানসিক চাপের পরিস্থিতি চিনতে পারবেন...”
কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজ হল অপ্রকাশিত ছোট গল্পের জন্য একটি বার্ষিক পুরস্কার যা কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত। পুরস্কারটি আফ্রিকা, এশিয়া কানাডা এবং ইউরোপ, ক্যারিবিয়ান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমনওয়েলথ অঞ্চলগুলির লেখকদের সাহিত্যচর্চাকে স্বীকৃতি দেয় এবং উৎসাহিত করে। আন্তর্জাতিক জুরি প্যানেল পাঁচটি অঞ্চলের প্রতিটি থেকে একজন বিচারককে নিয়ে গঠিত। প্রতি অঞ্চল থেকে একজন করে পাঁচজন বিজয়ী হবেন। একজন আঞ্চলিক বিজয়ীকে সামগ্রিক বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি প্রাইজের সামগ্রিক বিজয়ী পাবেন ৫ হাজার পাউন্ড, বাকি চারটি আঞ্চলিক বিজয়ী পাবেন ২৫০০ পাউন্ড। বিজয়ী ছোটগল্প ইংরেজিতে অনুবাদ হলে, অনুবাদক অতিরিক্ত পুরস্কারের অর্থ পাবেন। চূড়ান্ত নির্বাচন একটি আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেল দ্বারা বিচার করা হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন