উর্মি বিছানায় বাবু হয়ে বসে আছে। শাড়ির আঁচল পাশে ছড়ানো। ব্লাউজের হুক খুলে জানালার কপাটের মতো হাট করা। ভিতরে সেই মেরুন ব্রা।
ক’দিন আগেই ফেসবুকে এমন একটা কৌতুকি দেখেছে সবুজ। উর্মির ব্রা-এর দিকে অপলকে চেয়ে মনে পড়ছিল সবুজের। ভারী স্তনযুগল যথাস্থানে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে সেটা। উর্মি ফর্সা। খুবই ফর্সা। স্তনযুগল গোলাপি আভা ছড়াচ্ছে। বাঁদিকের স্তনে একটা খয়েরি তিল। ওসবে সবুজের নজর নেই। ওর দৃষ্টি নিবদ্ধ উর্মির অন্তর্বাসে।
উর্মির ব্রা-টা মেরুন রঙের। ওই রঙেরই কাজ করা লেস বসানো। দুটো কাপ জুড়ে রাখা জায়গায় একটা ফুল টাইপের কিছু। উর্মিদের ব্যালকনিতে দড়িতে মেলা অবস্থায় অনেকবার এই ব্রা দেখেছে সবুজ। দোতলার ব্যালকনিতে। কাজেই ইচ্ছা থাকলেও ছুঁয়ে দেখা হয়নি। উর্মিদের ব্যালকনিতে দড়িতে রোজ হরেক রঙের, হরেক বাহারের ব্রা মেলা থাকে। সবুজের খুব ইচ্ছা করে একবার ছুঁয়ে দেখতে। পারে না। বাড়িতে ঢুকতে-বেরতে অজান্তেই সবুজের চোখ চলে যায় উর্মিদের ব্যালকনিতে।
সিঁড়িতে ওঠা-নামার সময় মাঝেমধ্যে ওদের দেখাও হয়। কখনও উর্মির সঙ্গের ওর স্বামী থাকে, কখনও ও একা। হেসে, মাথা নেড়ে কথা হয়। প্রতিবারই সবুজ আন্দাজ করার চেষ্টা করে যে উর্মি আজ কোনটা পরেছে।
উর্মি বিছানায় বাবু হয়ে বসে আছে। শাড়ির আঁচল পাশে ছড়ানো। ব্লাউজের হুক খুলে জানালার কপাটের মতো হাট করা। ভিতরে সেই মেরুন ব্রা। সবুজ বিছানার পাশে বসেছে পা ঝুলিয়ে। উর্মি ওর একটা হাত তুলে নিয়ে নিজের বামদিকের স্তনে রাখল। সবুজ তার স্তনে আলতো করে হাত বোলাতে থাকলো। পরম সুখে চোখ বন্ধ করে ফেলল উর্মি। সবুজ আসলে ব্রা-এর মোলায়েম কাপড়টা পরখ করছিল। একবার ধারের লেস, মাঝের ফুল ছুঁয়ে দেখলো। তারপর স্ট্র্যাপে দু’ আঙ্গুল ঢুকিয়ে নামাতে যাচ্ছিল, উর্মি ওর হাত চেপে ধরলো, “না, ওভাবে নয়, আন্দাজে ব্রায়ের পিছনের হুক খুলতে হবে।” সবুজকে যেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল উর্মি।
আর এই সময়েই বছর কুড়ি আগের সেই ঘটনাটা মনে পড়ে গেল সবুজের। ডায়মন্ড হারবারের হোটেলের ঘরে এই চ্যালেঞ্জই দিয়েছিল কৌমুদিও। সবুজ পেরেছিল, তবে একটু কসরত করতে হয়েছিল। পাটিগণিতের মতো। সবুজ হাতড়ে বুঝেছিল কৌমুদির ব্রা-এর হুকটা জেড-হুক। ডান হাতে একটা স্ট্র্যাপ চেপে বাঁ হাত হুকটা তুলে ফেলেছিল। অর্ডিনারি, সেকেলে হুক হলে একটু হয়তো সমস্যা হত। সেদিনই সবুজ বড় হয়ে গেছিল।
আর সেদিন সবুজ বুঝেছিল যে মেয়েদের অসাধ্য কিছু নেই। সত্যি, মেয়েরা কী অসাধারণ কাজটা শিখে ফেলে! আন্দাজে ব্রা-এর হুক আটকাতে পারে।
আরও অনেক পরে, লিপির কাছে ব্রা-এর আরও পাঠ পেয়েছে সবুজ। লিপি তখন ওর সহকর্মী। ক্রমে দু’জনেরই প্রেম চাগার দিয়েছে। মাঝেমধ্যেই সিনেমা হলের অন্ধকারে চুমু, জামার উপর দিয়ে স্তনে হাত– এই পর্যন্ত দেওয়া-নেওয়া পৌঁছে গেছে। এই সময় একদিন আড়ালে কুর্তির সোল্ডার সরিয়ে ব্রেসিয়ারের গোলাপি স্ট্র্যাপ দেখিয়ে সবুজকে প্ল্যানেটরিয়ামে নিয়ে গেছিল।
আর সেদিন সবুজ বুঝেছিল যে মেয়েদের অসাধ্য কিছু নেই। সত্যি, মেয়েরা কী অসাধারণ কাজটা শিখে ফেলে! আন্দাজে ব্রা-এর হুক আটকাতে পারে।
সেদিন পিঠের চেন খুলে কুর্তি নামিয়ে জোড়া পায়রার মতো বক্ষ সবুজের কাছে অবারিত করে দিয়েছিল লিপি। অনেক্ষণ সেই গভীর খাদে শিশুর মতো মুখ গুঁজে রেখেছিল সবুজ। প্ল্যানেটরিয়ামে তখন প্রচণ্ড শব্দে মহাবিশ্বের সৃষ্টি পর্ব চলছে।
লিপি বলেছিল, “এই ব্রা-টা নতুন। কাল নিউমার্কেটের একটা দোকান থেকে কিনেছি। ব্র্যান্ডেড। একটু দামি। জানো তো সব ব্রা সব মেয়ের শরীরে ফিট হয় না। বিয়ের পর এমন কিনে দিতে হবে কিন্তু।”
লিপি এখনও দামি ব্রা পরে। যদিও বারবার ব্র্যান্ড পাল্টায়। অনলাইনে অর্ডার করে। ভিন্ন রকমের ও ভিন্ন রঙের।
উর্মি একটা সারপ্রাইজ গিফট দেওয়ার নাম করে দুপুরে ঘরে ডেকে এনেছে সবুজকে। উর্মি বেশ কিছুদিন লক্ষ্য করেছে যে ব্যালকনিতে মেলে রাখা ব্রাগুলোর দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সবুজ। সিঁড়িতে, রাস্তায়, বাজারে দেখা হলেও এমন দৃষ্টিতে দেখে যাকে ভালো বলা চলে না। তবে, মাঝেমধ্যে পুরুষের খারাপ চাওনি মন্দ লাগে না। না-হলে এ রূপ-যৌবন কী কামের! কোনও পুরুষ যদি না-ই দেখলো, তাহলে এতো দাম দিয়ে ব্র্যান্ডের বক্ষআবরণী কি শুধু স্তনযুগল যথাস্থানে আটকে রাখার জন্য? সে হলে তো সস্তার সাদা-মাটা ব্রা কিনে পরলেই হয়। দিদা যেমন, তাঁকে কখনও ব্রেসিয়ার পড়তে দেখেনি উর্মি। এমনিই ব্লাউজ পরতেন। পেটের কাছে ঝুলে আসা স্তনের তখন আর কোনও গৌরব ছিল না অবশ্য।
কিন্তু, উর্মির নিজের স্তন নিয়ে অহংকার আছে। আর সেগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টাও আছে। এই ব্যাপারটায় লিপির সঙ্গে ও একমত। একদিন দুপুরে দুজনে মিলে সিটি সেন্টারে গেছিল। মার্কেটিং করতে। একটা ব্র্যান্ডেড ফ্রেঞ্চির আউটলেটে ঢুকেছিল ওরা ব্রা কিনতে। সম্ভবত, দুজনেই দুজনকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিল, ব্রা নিয়ে প্যাসনে ও ফ্যাশানে কেউ কারও কম নয়। হয়তো আজ সে কারণেই সবুজকে আমন্ত্রণ। উর্মি সবুজকে আজ দেখিয়ে দেবে, হুঁ-হুঁ বাবা, আমিও ব্র্যান্ডেড ব্রায়ের কম সমঝদার নয়।
সবুজের অবশ্য ব্র্যান্ড নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই, ব্রা নিয়ে যত কৌতুহল। উর্মির খুলে দেওয়া ব্রা দু’হাতের মুঠোয় নিয়ে কিছুক্ষণ তার ঘ্রান নিল। তারপর সেটাকে বুকে চেপে রাখলো। লিপির পর এই প্রথম কোনও নারীর ব্যবহৃত ব্রা সবুজ হাতের মুঠোয় পেয়েছে।
তবে, সবুজ ব্রা প্রথম হাতে ধরেছিল ক্লাস এইটে পড়ার সময়। তখন ও ওটাকে ব্রেসিয়ার নামেই জানত। একবার ক’দিনের জন্য ওর পিসতুতো দিদি এসেছিল ওদের বাড়িতে। তার অভ্যাস ছিল পরা ব্রা বাথরুমে ছেড়ে রেখে আসা। তার পরেই স্নানে ঢুকত সবুজ। কাঁপা-কাঁপা হাতে সেটা হাতের মুঠিতে নিয়ে তার ঘ্রাণ নিত। খুঁটিয়ে দেখতো অনেক্ষণ ধরে। কিশোর সবুজ বুঝতে পারতো ওর শরীর কী একটা পরিবর্তন হচ্ছে।
মা যখন অসুস্থ থাকতো তখন বাথরুমে ছেড়ে আসা কাপড়-জামা সবুজই কাচত-ধুত। ব্লাউজ, ব্রেসিয়ারও কাচত। কিন্তু তা নিয়ে আলাদা কোনও অনুভূতি ছিল না। মা অবশ্য বডিস বলতো ওই বস্তুটাকে। সে বডিসও একেবারে সাদামাটা বক্ষআবরণী। নতুন বডিসের প্যাকেটটাও ছিল অমন সাদামাটা। ব্রা পরা একটা সোনালি চুলের মেমের ছবি। হাতে আঁকা। ব্লকে ছাপা।
সবুজ ব্রা প্রথম হাতে ধরেছিল ক্লাস এইটে পড়ার সময়। তখন ও ওটাকে ব্রেসিয়ার নামেই জানত। একবার ক’দিনের জন্য ওর পিসতুতো দিদি এসেছিল ওদের বাড়িতে।
সবুজ মাকে একদিন পিসতুতো দিদিকে বকাঝকা করতে শুনেছিল। বলেছিল, “তুই কেমন মেয়ে রে। বড় হচ্ছিস, বুদ্ধশুদ্ধি নেই? ওসব জিনিসগুলো ওভাবে ছেড়ে রেখে আসতে হয় বাথরুমে?”
দিদি চলে যাওয়ার পর বেশ কিছুদিন খুব মনখারাপ ছিল সবুজের। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মানিকতলায় ফুটপাথের দোকানে টাঙানো সারিসারি রঙবেরঙের ব্রা দেখতো দাঁড়িয়ে পড়ত সবুজ। ড্যাবড্যাবে চোখে হোসিয়ারির দোকানের শোকেশে সাজানো ম্যানিকিনির বক্ষআবরণী দেখতো। রেডিওতে ব্রায়ের বিজ্ঞাপনে কান সজাগ হয়ে যেত। সত্যি বলতে কি, রেডিওর বিজ্ঞাপনেই ও প্রথম জেনেছিল প্রথম বড় হওয়া মেয়েদের সুবিধার জন্য সামনে হুক দেওয়া ব্রা এনেছে একটা কোম্পানি।
লিপির এখন ওরকম সামনে হুক দেওয়া ব্রা হলে সুবিধা হত। ইদানিং শরীর ভারী হয়ে যাওয়ার জন্য আর পিঠের হুক লাগানোর সেই মুন্সিয়ানাটা দেখাতে পারে না। সবুজকে ডাকে ব্রা-এর হুক আটকে দিতে, খুলে দিতে। সবুজ জানে ওকে ছাড়াও একাই ব্রা খুলতে পারবে লিপি। ওটা আসলে সবুজের কাছে আবদার। স্বামী সোহাগ। একটু আদর নেওয়া। না হলে মনে হবে, স্বামীর কাছে পুরানো হয়ে গেছে।
সবুজ একদিন লিপিকে জিজ্ঞাসা করেছিল, “আমি যখন না থাকি, তখন কী করো?”
লিপি কিছু না বলে কাঁধ থেকে স্ট্র্যাপ নামিয়ে ব্রা-টা ঘুরিয়ে নিয়ে হুক খুলে ফেলেছিল অনায়াসে। সবুজ অবাক হয়, সত্যি লিপি কতকিছু জানে! কতবার লিপিকে দেখেছে, নাইটির ভিতর থেকে ব্রা খুলে হাতা দিয়ে বের করে আনতে। বিয়ের আগে, সিনেমা হলে পিছনের সিটে সবুজের আবদারে লিপি ওইভাবেই টপের ভিতর থেকে ব্রা বের করে এনে ওকে দিত। সবুজ সেটা হাতের মুঠোয় নিয়ে বসে থাকত। সিনেমা ভাঙলে লিপি ওয়াশরুমে গিয়ে আবার পরে নিত।
সবুজের এই সময় মনে হচ্ছে, উর্মিও কি ব্রা খোলা-পরার এত রকম পদ্ধতি জানে!
উর্মি বলল, “কি গো, কী ভাবছো অত? ভয় লাগছে?”
উর্মি এখন বিছানায় এলিয়ে পড়েছিল। ও আগেই সবুজের শার্ট খুলে ফেলছে। সবুজ উর্মির অনাবৃত বুকের গভীর খাঁজে মুখ গুজে দিল।
উর্মি সদ্য ৩৭ পেরিয়েছে। এই বয়সে গড়পড়তা বাঙালি মেয়েরই শরীরে আর যৌবনের ছাপ থাকে না। স্তন ভারী হয়ে ঝুলে পড়ে। মা হওয়ার পর এক তো মুটিয়ে যায়, তার উপর আর নিজের শরীরের দিকে যত্ন নেওয়ার সময় থাকে না। উর্মি এখনও সন্তান নেয়নি। শুধু সেটাই একমাত্র কারণ নয়, উর্মি জানে নিজেকে আকর্ষণীয় রাখতে সঠিক মাপের ব্রা পরতে হয়। শুধু তা-ই নয়, রাতে শোয়ার সময় ছাড়া সবসময়ই ব্রা পরে থাকে।
এক প্রবল গরমের দুপুরে কলের জল চলে গেছিল। কেয়ারটেকারকে পাম্প চালাতে বলার জন্য নীচে নেমে এসেছিল উর্মি। ওড়না গায়ে চাপাতে ভুলে গেছিল। কথা বলার সময় যুবক কেয়ারটেকার উর্মিকে যেন চোখ দিয়ে চাটছিল। অস্বস্তি হচ্ছিল ভীষন। ঘরে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে উর্মি দেখে, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করে ঘেমে গেছে। পরনের কামিজটা ভিজে গায়ের সঙ্গে চেপে বসেছে। আর ভিতরে ব্রা-টা প্রকট হয়েছে।
উর্মি এখন বিছানায় এলিয়ে পড়েছিল। ও আগেই সবুজের শার্ট খুলে ফেলছে। সবুজ উর্মির অনাবৃত বুকের গভীর খাঁজে মুখ গুজে দিল।
উর্মি আর লিপি যেদিন একসঙ্গে বেরিয়েছিল, মার্কেটিংয়ের পর একটা ক্যাফেতে কিছুক্ষণ বসেছিল। ওদের কথা চলছিল ব্রা নিয়ে। তখন উর্মি বলে, “আমি তো বাবা ওদের সঙ্গে একমত হতে পারি না। ওই যে সিক্সটিজে নিউ জার্সিতে যারা নারীবাদী আন্দোলনের নামে ব্রা-এর বাঁধন থেকে নিজেদের মুক্ত করেছিল!” স্বাধীনতার জন্য ব্রা-এর বাঁধনমুক্ত হওয়াটা মোটেই জরুরি মনে করে না উর্মি। বলে, “আমি সেই সময় নিউ জার্সিতে থাকলে মোটেই নিজের ব্রা খুলে ফ্রিডম ট্র্যাশ ক্যানে ফেলতাম না।”
এই আন্দোলনের কথাটা লিপি প্রথমবার শুনেছিল। তারপর বলছিল, “নারীবাদ জিনিসটা কী?”
এটা লিপির অজ্ঞানতার প্রশ্ন, নাকি কটাক্ষ, তা উর্মি সেদিন বুঝতে পারেনি।
উর্মির বুক থেকে মুখ তুলে সবুজ বলল, “তোমাকে ব্রা পরেই বেশি ভালো লাগে।”
ঝটকা মেরে বিছানায় উঠে বসল উর্মি। বলল, “আমি তোমাকে এইরকম একটা গোলাপি ব্রা গিফট করবো, খুশি? নতুন। একবারও পড়িনি।”
সবুজ বলল, “চাই না। তুমি একবার তোমার ওই কালো ব্রা-টা পরে দেখাবে? তোমাকে ওটাতে দারুন দেখাবে।”
–“পাগল লোক। দাঁড়াও, নিয়ে আসি।”
এই বলে বুকে আঁচল চাপা দিয়ে বিছানা থেকে নামল উর্মি। বেডের পাশেই তিন পাল্লার ওয়ারড্রব। তার একটা পাল্লা খুলে ফেলল উর্মি। তারপর সবুজকে বলল, “এসো, দেখো কোনটা কোনটা তোমার পছন্দ। আমি সে গুলো সব পরে তোমায় দেখাবো।”
সবুজ দেখলো, চারটে রডে পরপর সাজানো বিভিন্ন ফ্যাশনের রঙবেরঙের ব্রা। উর্মি সেগুলোতে এমনভাবে একবার হাত বোলাল যেন সেটা বহুমূল্য রত্নরাজির খাজানা। কোনওটা হয়ত কখনও পরাও হয়নি। তারমধ্যে থেকে একটা টেনে বের করে আনল। সবুজকে দেখিয়ে বলল, “এটা স্পোর্টস ব্রা। জিমে গেলে পরি। এরকম আরও তিনটে আছে।”
–“তুমি জিমে যাও নাকি?”
–“না, নিয়মিত যাওয়া হয় না, তবে কোথাও বেড়াতে গেলে সঙ্গে নিয়ে যাই। হোটেলের জিমে যাই। এটা দেখো, এটা সুইমিং ব্রা। সামারে অ্যাকোয়াটিকায় যাওয়ার জন্য কয়েকটা ও কিনে এনেছে।”
–“তোমার বর তোমার জন্য একা দোকানে গিয়ে ব্রা কিনে আনে!” বিস্ময় প্রকাশ করে সবুজ।
উর্মি হেসে বলে, “আরে বাবা, আনে না। সে বার গোয়া যাওয়ার আগে ও কতগুলো কিনে এনেছিল। আর যখন দুবাই গেছিল, সেখানকার মার্কেট থেকে তিনটে ব্রা কিনে এনেছিল আমার জন্য। জানো আমার জন্য সেরা গিফট ব্রা। আমার বর জানে।”
সবুজ প্রথমবার ব্রা-এর দোকানে গেছিল ওর ছোটবেলার বন্ধু বাপির সঙ্গে। অল্পবয়সে পেকে যাওয়া বাপি তেইশেই বিয়ে করে। বিয়ের মাস দুয়েক পর সবুজকে নিয়ে বউয়ের ব্রা কিনতে গেছিল। তার আগে কসম খেতে হয়েছিল সবুজকে, এ কথা সে কাউকে বলবে না। বাপির রোজগারপাতি কম, সাধারণ দুটো নন-প্যাডেড ব্রা কিনেছিল। একটা লাল, আর একটা কালো। বাপিকে সাইজ বলে দিয়েছিল ওর বউ।
পিসতুতো দিদি চলে যাওয়ার পর এই বাপি ওদের বাড়ির চিলেকোঠার ঘরে সবুজকে নিয়ে গিয়ে ওর খাজানা দেখিয়েছিল। তারমধ্যে দুটো পুরানো ব্রা-ও ছিল। সবুজ জিজ্ঞাসা করায় বাপি বলেছিল, “ঝিনটিদির ব্রা। বাইরে মেলা ছিল। রাতে তুলতে ভুলে গেছিল। ঝেড়ে দিয়েছি।”
সবুজ প্রথমবার ব্রা-এর দোকানে গেছিল ওর ছোটবেলার বন্ধু বাপির সঙ্গে। অল্পবয়সে পেকে যাওয়া বাপি তেইশেই বিয়ে করে। বিয়ের মাস দুয়েক পর সবুজকে নিয়ে বউয়ের ব্রা কিনতে গেছিল।
সবুজের মনে পড়েছিল, দিনকয়েক আগে একদিন সকালবেলা ওদের পাশের বাড়ির ঝিনটিদির মা খুব চিৎকার চেঁচামেচি করছিল তাদের বাইরে মিলে রাখা কাপড় চুরি হয়ে গেছে বলে।
লিপির সব ব্রা-ই প্যাডেড। বিভিন্ন ধরনের পোশাকের জন্য ভিন্ন ডিজাইনের ব্রা। কোনওটার সরু স্ট্র্যাপ, কোনওটার চওড়া, কোনওটার ট্রান্সপারেন্ট স্ট্র্যাপ। লিপিকে একদিন সবুজ জিজ্ঞাসা করেছিল, “তুমি কি ব্রা নিয়ে গবেষণা করো?”
লিপি আলতো করে ওর নাকটা টিপে দিয়ে বলেছিল, “তোমার থেকে কমই মশাই।” তারপর বলেছিল, “জানো তো ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম ব্রা আবিস্কার হয়েছিল। সেগুলো কিন্তু মোটেই এখনকার মতো ছিল না। ১৯০৭ সালে ভোগ ম্যাগাজিনে ব্রা-এর ইতিহাস নিয়ে একটি লেখায় প্রথম বার ব্রেসিয়ার শব্দটা ব্যবহার হয়। ১৯২২ সালে এক মার্কিন মহিলা ব্যবসায়ী আধুনিক কাপ-সাইজ ব্রা-এর উদ্ভাবন করেন। আর ১৯৩০ থেকে ব্রা শব্দটাই জনপ্রিয় হয়।”
সবুজ হাঁ করে তাকিয়ে থাকে লিপির মুখের দিকে। তারপর বলে, “বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্রা কি তুমি জানো?”
মাথা নাড়ে লিপি।
সবুজ বলে, “রেড হট ফ্যান্টাসি ব্রা। ২০০০ সালে মনি-মুক্ত খচিত ওই ব্রা-এর দাম উঠেছিল ১৫ মিলিয়ন ডলার। গিনেস বুক অফ রেকর্ডস-এ নামও তুলেছিল।”
সবুজ দ্বিতীয়বার ব্রা-এর দোকানে গেছিল একা। লিপির সঙ্গে বিয়েটা পাকা হয়ে যাওয়ার পর দু’জন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে একাই সব কেনাকাটা করেছিল। বিয়ের দিন তত্ত্বে পাঠানোর জন্য শাড়ি-ব্লাউজের সঙ্গে লিপিকে একটা সুন্দর দেখে ব্রা পাঠানোরও সাধ হয়েছিল সবুজের। সেটা অবশ্য একাই কিনতে গেছিল সবুজ।
মধ্যবয়স্ক দোকানদার সবুজকে দেখেই বুঝেছিল যে সে একবারে আনাড়ি। সাইডে দাঁড় করিয়ে রেখে, মহিলা কাস্টমার দু’জনকে ছেড়ে দিয়ে সবুজকে বলেছিল, “এবার আপনি বলুন, কী ধরনের চাইছেন?"
সবুজ আমতা-আমতা করে বলেছিল, “ওই একটা সুন্দর ডিজাইনের দিন। কয়েকটা কালার দেখতে পারলে ভালো হয়।”
–“কার জন্য...মানে...কিছু মনে করবেন না, বান্ধবীর জন্য, নাকি স্ত্রীর জন্য?”
–“বান্ধবীর জন্য কেউ কিনতে আসে নাকি?”
–“বলেন কী মশাই, কত বয়স্ক কাস্টমার এসে পড়ে, তারা বান্ধবীর কাপ সাইজই জানে না। আবার কেউ কেউ নিঃসঙ্গ, ওই মাঝেমধ্যে দুটো ব্রা কিনে নিয়ে যায়। ম্যাগাজিন থেকে নায়িকাদের ছবি কেটে নিয়ে আসে। মোবাইলে ছবি দেখায়। সাইজ-টাইজের অত ধার ধারে না। সে যাক গে আপনি বলুন।”
সবুজের মনে পড়ে, কিছুদিন আগে একটা বিদেশি পোর্টালে খবর পড়েছিল যে ‘অনলাইনে দেদার বিকোচ্ছে ইউজড ব্রা’। তারমানে এই লোকগুলোর নতুন ব্রা নিয়ে খেলা পুরানো হয়ে গেলে তারা তখন ইউজড ব্রা কেনে? দোকানদার সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে সবুজের মুখের দিকে তাকিয়েছিল। সবুজ ঢোক গিলে বলেছিল, –“স্ত্রীর জন্য...মনে স্ত্রী হবে।”
–“তা সাইজ জানা আছে তো?” যথা সম্ভব গাম্ভীর্য রেখে বলেছিল দোকানদার।
ততধিক গম্ভীরভাবে সবুজ বলেছি, “চৌত্রিশ।”
‘অনলাইনে দেদার বিকোচ্ছে ইউজড ব্রা’। তারমানে এই লোকগুলোর নতুন ব্রা নিয়ে খেলা পুরানো হয়ে গেলে তারা তখন ইউজড ব্রা কেনে?
পিছন ফিরে শোকেস থেকে ব্রা-এর প্যাকেট নামাতে নামাতে দোকানদার বলেছিল, “আমি প্রথমেই আন্দাজ করেছিলাম আপনি নতুন, না হলে ঢুকেই ভ্রু কুঁচকে বলতেন ছত্রিশের একটা ব্রা দিন তো। তারপর বাছাবাছি না করে দাম মিটিয়ে প্যাকেট ব্যাগে পুড়ে নিতেন।”
দোকানদার দশ-বারোটা ব্রা ডেস্কের উপর ছড়িয়ে দিয়ে বলল, “গ্রাম মফস্বলের দিকে গৃহবধূরা তো আর সহসা দোকানে বেরোতে পারে না, তারা স্বামীকে বায়না করে। স্বামী বায়না পূরণ করে। সে যাকগে...।”
সবুজ কয়েকটা ব্রা নেড়ে চেড়ে বলেছিল, “এই-ই সব, আর কিছু অন্যরকম নেই?”
“হ্যাঁ, এইটে বলুন... উনি কি ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সঙ্গে পরবেন, নাকি ট্র্যাডিশনাল?”
“ট্র্যাডিশনাল।”
“কুর্তি-কামিজ, নাকি ব্লাউজ?”
“ব্লাউজ।”
“হাতা কাটা, নাকি হাতায়ালা?”
–“হাতায়ালা।”
–“হাতায়ালা।”
“ডিপিকাট, ভি কাট না বক্সকাট?”
“সেগুলো কী?”
“ব্লাউজের গলা, মশাই।”
সবুজ কেবিসির উত্তরের অপশন দেখে বাছার মতো ভেবেচিন্তে বলেছিল, “ধরুন শোল্ডারের অনেকটা দেখা যাবে।”
সবুজ কেবিসির উত্তরের অপশন দেখে বাছার মতো ভেবেচিন্তে বলেছিল, “ধরুন শোল্ডারের অনেকটা দেখা যাবে।”
“বেশ...ওটা অফ সোল্ডার। এবার বলুন, ব্যাকলেস কি?”
“না-না।”
“ঠিক জানেন তো?”
সবুজ ধৈর্য হারিয়ে বলে, “একটা সামান্য ব্রা কিনতে এসে এমন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে তা ভাবিনি দাদা।”
সবুজের অজ্ঞতায় অবাক হয় দোকানদার। বলে ওঠে, “কী মুশকিল...আপনি একে সামান্য জিনিস বলছেন? জানেন, ২০২১ সালে সারা বিশ্বে ব্রা-এর মার্কেট ছিল ২৭.৮ বিলিয়ন ডলারের। আরও শুনুন ২০৩১ সালে এটা ৪৬.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। এখন ওয়ার্কিং মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে। অনেক বেশি মেয়ে বাইরে বেরুচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। ব্রা এখন প্রায় সব মহিলার কাছে এসেনশিয়াল কমোডিটি।”
“এত সব জানলেন কীভাবে?”
“জানতে হয় মশাই। আপনি জেনে রাখুন, এই ব্রা তৈরিতে বহু মানুষের ভাবনা, গবেষণা আর রক্ত ঘাম করা পরিশ্রম থাকে। মেয়ে মানুষের বুকেই একটি বিরাট ইকোনমি।”
পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছতে থাকে সবুজ। দোকানদার বলে, “গলা শুকিয়ে গেছে? একটু জল খাবেন?”
প্রায় ৪৫ মিনিট পর ব্রা-এর প্যাকেট ব্যাগে ঢুকিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিল সবুজ। মাথা যন্ত্রণা করছিল।
সবুজের আবদারে কালো ব্রা-টা পরেছে উর্মি। সেটা পরে সবুজকে নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালো। সবুজ ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল। ঘাড়ে চুমু খেল। সবুজের হাতদুটো এতক্ষণ উর্মির কোমরে ছিল। এবার সেগুলো ওর বুকে উঠে এল। ব্রা-এর ওপর মোলায়েম ভাবে হাত বুলিয়ে বলল, “কত সাইজ?”
“কেন গিফট করবে নাকি?”
“ধরো তাই-ই।”
“চৌত্রিশ।” তারপর একটু থেমে বলল, “ব্রা-এর মাপ কিভাবে ঠিক হয় জানো?”
“না তো, কিভাবে ঠিক হয়?”
উর্মি সবুজের হাত দুটো স্তনের নীচে নামিয়ে সেভাবেই রেখে বলতে শুরু করল। যেন আগ্রহী ছাত্রকে অঙ্ক বোঝাচ্ছে, –“স্তনের ঠিক নিচের অংশ মাপলে যা আসে সেটা হলো ব্যান্ড সাইজ। ব্যান্ড মানে স্তন বাদে দেহের পরিধি। ঠিক নিপল বরাবর মাপলে যা আসে তা হলো বাস্ট সাইজ। বাস্ট মানে স্তনসহ দেহের পরিধি। বাস্ট সাইজ থেকে ব্যান্ড সাইজ বিয়োগ করলে কাপ সাইজ পাওয়া যায়। কাপ সাইজ মানে স্তনের পরিধি। যদি বিয়োগফল ১ ইঞ্চি আসে তাহলে কাপ সাইজ A টাইপ। ২ ইঞ্চি আসলে B টাইপ। ৩ ইঞ্চি আসলে C টাইপ। ৪ ইঞ্চি আসলে D টাইপ। আবার ব্যান্ড সাইজ ৩০ ইঞ্চি বা তার কম হলে ২ যোগ করতে হয়। আর বেশি হলে কিছু করতে হয় না। কিছু বুঝলে?”
অপরাধীর মতো মাথা নেড়ে সবুজ তার অসহায়তা বোঝালো। উর্মি বলল, “ঠিক আছে একদিনে হবে না। বাড়িতে বউয়ের কাছে প্র্যাকটিস করবে।” তারপর হা-হা করে হেসে উঠল উর্মি।
বছরখানেক পরের ঘটনা।
বছরখানেক পরের ঘটনা।
অফিস থেকে বিকেলবেলা বেরিয়ে প্রিন্সেপ ঘাটে গঙ্গার ধারে এসে বসেছে সবুজ। তিনমাস হল উর্মিরা পুনে চলে গেছে। ওর স্বামী সেখানে বদলি হয়েছে। কিটসব্যাগ খুলে উর্মি সেদিনের দেওয়া ব্রা-এর প্যাকেটটা কিছুক্ষণ দু’হাতে ধরে বসে থাকল সবুজ। তারপর সেটা গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিল। জোয়ার চলছিল। সেটা দ্রুত ভেসে গেল।
গতকাল রাতে একটা ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দিয়েছে লিপি। সবুজ রাতে নার্সিংহোমেই ছিল। ভোরে ডাক্তার চেম্বারে ডেকে উর্মির জন্য একটা ফিডিং ব্রা আনতে বলায় সবুজকে আর প্রশ্ন করতে হয়নি যে সে টা আবার কী? লিপি ওকে আগেই জানিয়ে রেখেছিল।
All rights reserved. No part of this publication may be reproduced, distributed, or transmitted in any form or by any means, including photocopying, recording, or other electronic or mechanical methods, without the prior written permission of the author and publisher.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন