বাঙালি তিন কন্যার সাহিত্য আকাদেমি জয়

সাহিত‌্য আকাদেমি পুরস্কার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে একটি বড় স্বীকৃতি। তাঁদের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাংলার পাঠকমহল।

বাঙালি তিন কন্যার সাহিত্য আকাদেমি জয়

বইতন্ত্র : সাহিত‌্য আকাদেমি পুরস্কার জয় তিন বাঙালি কন‌্যার। দীপান্বিতা রায়, সুতপা চক্রবর্তী, ও নন্দিনী সেনগুপ্তর হাত ধরে সাহিত্যের বড় পুরস্কার এল বাংলায় ৷ শনিবার সাহিত্য আকাদেমির তরফে বিভিন্ন ভাষায় ২৩ জন যুব পুরস্কারজয়ী এবং ২৪ জন বাল সাহিত্য পুরস্কারজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে ৷ অবশ‌্য, সংস্কৃতে যুব পুরস্কার বিজয়ীর ঘোষণা মুলতুবি রয়েছে, পরে জানানো হবে।

দীপান্বিতা রায় তাঁর কিশোর কাহিনী সিরিজ ‘মহীদাদুর অ্যান্টিডোট’, সুতপা চক্রবর্তী তাঁর কাব‌্যগ্রন্থ ‘দেরাজে হলুদ ফুল, গতজন্ম’ এবং নন্দিনী সেনগুপ্ত তাঁর ছোটদের বই ‘দ্য ব্লু হর্স অ্যান্ড আদার অ্যামেজিং অ্যানিমাল স্টোরিজ ফ্রম ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি’-র জন‌্য এবছরের আকাদেমি পুরস্কার পাচ্ছেন। সাহিত‌্য আকাদেমি পুরস্কার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে একটি বড় স্বীকৃতি। তাঁদের এই সাফল্যে 
উচ্ছ্বসিত বাংলার পাঠকমহল।

১৫ জুন সাহিত্য আকাদেমির তরফে এক্স (টুইট) বার্তায়, পুরস্কার জয়ীদের নাম ঘোষণা করে বলা হয়েছে, ‘সাহিত্য আকাদেমির কার্যনির্বাহী বোর্ডের সভাপতি শ্রীমাধব কৌশিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ২৩ জন লেখককে নির্বাচন করা হয়েছে ৷ যাঁরা সংশ্লিষ্ট ভাষায় তিনজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত জুরির করা সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়ম মেনে নির্বাচিত হয়েছেন৷ কে বৈশালীকে তাঁর স্মৃতিকথা বা আত্মজীবনী ‘হোমলেস: গ্রোয়িং আপ লেসবিয়ান অ্যান্ড ডিসলেক্সিক ইন ইন্ডিয়া’র জন্য সম্মানিত করা হবে ৷ গৌরব পাণ্ডে তাঁর কবিতা সংকলন ‘স্মৃতিও কে বিচ ঘিরি হ্যায় পৃথ্বী’র জন্য এই সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন।”

সাহিত‌্য আকাদেমি যুব পুরস্কার দশটি কবিতার বই, সাতটি ছোট গল্পের সংকলন, দুটি প্রবন্ধ, একটি প্রবন্ধের সংকলন, একটি উপন্যাস, একটি গজলের বই এবং একটি আত্মজীবনীমূলক রচনাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অন্যান্য যুব পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে রয়েছেন নয়নজ্যোতি শর্মা (অসমিয়া), হিনা চৌধুরী (ডোগরি), রিংকু রাঠোর (গুজরাতি), শ্রুতি বিআর (কন্নড়), মোহাম্মদ আশরাফ জিয়া (কাশ্মীরি), অদ্বৈত সালগাঁওকর (কোঙ্কানি), রিঙ্কি ঝা ঋষিকা (মৈথিলি), এবং শ্যামাকৃষ্ণান আর (মালয়ালম)। প্রত্যেক বিজয়ীকে একটি স্মারক এবং ৫০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হবে। এছাড়া, লেখক নন্দিনী সেনগুপ্ত এবং দেবেন্দর কুমারকে বাল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে, নন্দিনী সেনগুপ্তকে ‘দ্য ব্লু হর্স অ্যান্ড আদার অ্যামেজিং অ্যানিমাল স্টোরিজ ফ্রম ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি’ এবং দেবেন্দর কুমারকে তাঁর সংকলন ‘৫১ বাল কাহানিয়ান’-র জন্য সম্মানিত করা হয়েছে।

এবারের বাল সাহিত্য পুরস্কারে সাতটি উপন্যাস, ছয়টি কবিতার বই, চারটি গল্প, পাঁচটি ছোটগল্প, একটি নাটক এবং একটি ঐতিহাসিক কথাসাহিত্য দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ভাষায় বিজয়ীদের মধ্যে রয়েছেন রঞ্জু হাজারিকা (অসমিয়া), দীপান্বিতা রায় (বাঙালি), বির্গিন জেকোভা মাচাহারি (বোড়ো), বিশান সিং ‘দরদি’ (ডোগরি), গিরা পিনাকিন ভট্ট (গুজরাতি) এবং কৃষ্ণমূর্তি বিলিগেরে (কন্নড়), মুজাফ্ফর হুসেন দিলবর (কাশ্মীরি), হর্ষ সদগুরু শেত্যে (কোঙ্কনি), নারায়ঙ্গী (মৈথিলি), উন্নি আম্মায়ম্বলাম (মালয়ালম), ক্ষেত্রমায়ুন সুবাদানি (মণিপুরি), ভারত সাসানে (মারাঠি), বসন্ত থাপা (নেপালি) এবং মানস রঞ্জন সামল (ওড়িয়া) ৷

দীপান্বিতা রায় আদতে আসানসোলের বাসিন্দা। লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করা দীপান্বিতা বরাবর শিশু সাহিত্য রচনায় মন দিয়েছেন। এবার তাঁর রচিত শিশুদের জন্য উপন্যাস ‘মাহিদাদুর অ্যান্টিডোট’ এনে দিল বাল সাহিত্য পুরস্কার। সুতপা চক্রবর্তী অসমের শিলচরের বাসিন্দা। কলকাতার আদম প্রকাশনী থেকে ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় ‘দেরাজে হলুদ ফুল, গতজন্ম’। এটা সুতপার তৃতীয় বই। এর আগে তাঁর 'ভ্রমরযান' এবং 'মায়াবিদ্যা' নামের দুটো কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। নন্দিনী সেনগুপ্ত পুদুচেরির বাসিন্দা। সাহিত‌্যচর্চার পাশাপাশি সাংবাদিকতা তাঁর পেশা। ঐতিহাসিক পটভূমির উপন‌্যাস লেখার জন‌্য তিনি পাঠকমহলে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তাঁর অন‌্যান‌্য বইগুলির মধ্যে রয়েছে– ‘রানি দুগ্গাবতী’, ‘দ‌্য কিং উইদিন’, ‘দ‌্য পয়জনড হার্ট’ ইত‌্যাদি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন