জোয়ান রাওলিং। চিনতে পারলেন না? চিনবেন, যদি বলি জে কে রাওলিং (J. K. Rowling)। হ্যারি পটারের স্রষ্টার এটি ছদ্ম নাম। প্রথমবার নিজের লেখা বই প্রকাশ করতে গিয়ে তাঁর ধারণা হয়েছিল, একজন মহিলাকে লেখক হিসাবে গ্রহণ না-ও করতে পারে। তাই ছদ্মনামের আড়াল নিয়েছিলেন। তাঁর মূল নামের সাথে কোনও মধ্যবর্তী নাম না থাকলেও তিনি ছদ্ম নামের সাথে ‘K’ অক্ষরটি যোগ করেন তাঁর দাদি ক্যাথরিনের সম্মানে।
জে কে রাওলিং এর জন্ম ৩১ জুলাই ১৯৬৫ সালে, ইংল্যান্ডের দক্ষিণে গ্লুসেস্টারশায়ারের ছোট্ট একটি শহরে। তাঁর বাবা পিটার রাওলিং ছিলেন একজন এয়ারক্রাফট ইঞ্জিনিয়ার আর মা অ্যান রাওলিং ছিলেন একজন সায়েন্স টেকনিশিয়ান। সাফলে্য পেছনের গল্পটা কিন্তু সুখের ছিল না। জীবনের একটা পর্যায় পর্যন্ত তাঁকে অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখী হতে হয়েছে। আধপেটা খেয়ে বা উপবাসে দিন কেটেছে। তবুও তিনি তাঁর স্বপ্নের পেছনে ছুটে গেছেন। বারবার ব্যর্থ হওয়ার পরও হাল ছাড়েন নি।
বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাসে লেখকদের মধ্যে তিনিই প্রথম একশো কোটি ডলারের মালিক হয়েছেন। পৃথিবীর সবথেকে ধনী লেখকের কথা বলতে গেলে এখনও তাঁর নামটি উঠে আসে সবার আগে। ‘সানডে টাইমস’ ম্যাগাজিনের ২০১৭ সালের ধনীদের তালিকা অনুযায়ী রাওলিংয়ের মোট সম্পদের পরিমান প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
কিন্তু প্রথমে প্রকাশকরা চাপতেই রাজি হয়নি বইটি। প্রকাশকদের ধারণা ছিল বইটি ছেপে তারা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ১৯৯৫ সালে তিনি শেষ করেন হ্যারি পটার সিরিজের তাঁর প্রথম বই ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’। এরপর তিনি বিভিন্ন প্রকাশকের কাছে পাণ্ডুলিপি পাঠাতে থাকেন।
জানলে অবাক হবেন, প্রায় ১২ জন প্রকাশক তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর সাফল্যের মুখ দেখেছিল ‘হ্যারি পটার’। শেষপর্যন্ত ব্লুমসবারি প্রকাশনী তাঁর বইটি ছাপাতে রাজি হয়। সংস্থার চেয়ারম্যানের আট বছরের মেয়ের বইয়ের প্রথম চ্যাপ্টারটি পড়ে বেশ ভাল লাগায় ব্লুমসবারি প্রকাশনী রাওলিংকে দেড় হাজার পাউন্ড অগ্রিম দিয়ে প্রকাশ করতে চায় ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’। প্রথম প্রকাশে বইটির এক হাজার কপি ছাপা হয়। যার মধ্যে প্রায় ৫০০ কপি বই-ই বিক্রি করা হয় বিভিন্ন স্কুল, কলেজের লাইব্রেরিতে।
ছোট বোনকে প্রায়ই কাল্পনিক গল্প শোনাতেন রাউলিং। সবই আজগুবি মতো! একসময় তঁার মনে হয়, সেই গল্পগুলিই বই আকারে লিখে ফেললে কেমন হয়? কিন্তু বাবা-মা মেয়েকে গল্প লিখে সময় নষ্ট করতে দিতে রাজি ছিলেন না। বাধ্য হয়ে উচ্চশিক্ষায় মন দেন রাউলিং। একসময় প্রচণ্ড অর্থসংকটের মধ্যে পড়ে শুধু টাকা রোজগারের জন্য ফের সেই সুপ্ত বাসনা জাগিয়ে তোলেন।
বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত ছবি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন