বই তো অনেক পড়েছেন, পড়ছেনও। কিন্তু এই আটটি বই জীবনে একবার অন্তত পড়তেই হয়। সেরা দশটি বইয়ের তালিকা।
ওয়ার অ্যান্ড পিস
War and Peace
লিও টলস্টয়
টলস্টয় মহাকাব্যটি লিখেছিলেন রাশিয়ার নেপোলিয়ন যুগকে কেন্দ্র করে। যুদ্ধক্ষেত্র এবং হোম ফ্রন্টের তিনটি কুখ্যাত চরিত্রকে ঘিরে এগিয়েছে কাহিনি। পেরে বেজুখভ একজন কাউন্টের অবৈধ পুত্র, যিনি নিজের উত্তরাধিকারের জন্য লড়াই করছেন। প্রিন্স আন্দ্রেই বলকনস্কি নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তাঁর পরিবারকে ছেড়ে চলে এসেছেন এবং নাতাশা রোস্তভ হলেন একজন অভিজাত ব্যক্তির সুন্দরী অল্পবয়সী মেয়ে। টলস্টয় একই সঙ্গে সেনাবাহিনী ও অভিজাতদের উপর যুদ্ধের প্রভাব ফুটিয়ে তুলেছেন।
মোবি-ডিক (দ্য হোয়েল)
Moby-Dick (The Whale)
হারম্যান মেলভিল
‘মোবি-ডিক (দ্য হোয়েল)’ মার্কিন লেখক মেলভিলের অনবদ্য সৃষ্টি। কেন্দ্রীয় চরিত্র আহাবকে ঘিরে গড়ে উঠেছে গল্প। হোয়েলিং শিপ ‘পিকোড’-এর ক্যাপ্টেন হলেন আহাব। বিশালাকার হোয়াইট স্পার্ম তিমির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। কারণ, এই তিমি তাঁর হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের অংশ কামড়ে নিয়ে গেছে। এ জন্য পাগলের মতো সাগরে সেই তিমির অনুসন্ধান করে চলেন আহাব। গল্পের সূত্রধর হলেন ইসমায়েল নামের এক নাবিক। এই বইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় উক্তি হল ‘আমাকে ইসমায়েল বলে ডাকুন’।
ব্লিক হাউস
Bleak House
চার্লস ডিকেন্স
ডিকেন্সের দীর্ঘতম উপন্যাস ‘ব্লিক হাউস’। বইটি লেখা হয়েছে জার্নডাইস পরিবারের গল্পকে ঘিরে, যাদের প্রত্যাশা উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পদ পাওয়া। কিন্তু বারবার ব্যর্থতার মুখে পড়ে সেই স্বপ্ন। কারণ, জার্নডাইস অ্যান্ড জার্নডাইস মামলাটি দীর্ঘকাল ধরে আইনি মারপ্যাঁচের মধ্যে চলছে এবং প্রজন্মান্তর ধরে চলে আসছে। মামলাটি এই জটিল যে বেঁচে থাকা উত্তরাধিকাররা এই মামলার কিছু বুঝে উঠতে পারে না। ডিকেন্স বইটিতে ‘কোর্ট অব চ্যান্সেরি’ নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। এই আদালতে একটি মামলা কয়েক দশক ধরে চলতে পারে।
আ লিটল লাইফ
A Little Life
হানিয়া ইয়ানাগিহারা
বইটি ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। চার বন্ধুর জীবনের গল্পকে ঘিরে উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে। কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে তাঁরা অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে নিউইয়র্ক শহরে যান। কাহিনির চরিত্রগুলোর মধ্যে জেবি হলেন শিল্পী, উইলিয়াম একজন উচ্চাকাঙ্খী অভিনেতা এবং ম্যালকম একজন স্থপতি। আর জুড হলেন নিজের ক্ষতি করতে চাওয়া একজন আইনজীবী। তঁার আবার একটি রহস্যময় অতীত রয়েছে। আর এ বইয়ে তাঁর এই গল্পই তুলে ধরা হয়েছে।
মিডলমার্চ
Middlemarch
জর্জ এলিয়ট
এলিয়টের মাস্টারপিস হিসাবে বিবেচিত উপন্যাস ‘মিডলমার্চ’ -এ একটি কাল্পনিক শহরের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জীবন নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ভূস্বামী থেকে খামার বা কারখানার শ্রমিক, সবার কথাই স্থান পেয়েছে উপন্যাসটিতে। তবে মূল দৃষ্টিপাত করা হয়েছে দুটি চরিত্রের উপর। তাঁদের একজন হলেন জেদি ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন ডোরোথিয়া ব্রুক এবং অন্যজন আদর্শবাদী টারটিয়াস লিডগেট। তাঁরা দুজনই বিপর্যস্ত বৈবাহিক জীবনের শিকার। উনিশ শতকে লেখা উপন্যাসটিতে রয়েছে অবিশ্বাস্য রকম আধুনিকতাবোধ।
ইন সার্চ অব লস্ট টাইম
In Search of Lost Time
মার্সেল প্রুস্ট
‘আ লা রিচার্চে দু টেম্পস পারদু’ (মূল ফরাসি শিরোনাম) বইটির পৃষ্ঠাসংখ্যা তিন হাজারের বেশি, যাকে ১৩টি ভলিউমে ভাগ করা হয়েছে। বইটির মোট শব্দসংখ্যা প্রায় ১৩ লাখের মতো। এটি এখনও পর্যন্ত দীর্ঘতম উপন্যাস হিসাবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। লেখকের শৈশবের স্মৃতি এবং যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বইটির গল্প।
ডন কিয়োটে
Don Quixote
মিগুয়েল ডি সার্ভান্তেস
ডন কিয়োটে একজন মধ্যবয়সী স্প্যানিশ ভদ্রলোক, যিনি বীরদের অনেক রোমান্স গাঁথা পড়েন। সেই থেকে তিনি তলোয়ার তুলে একজন ভবঘুরে বীর হয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন। নিজের পুরোনো ঘোড়া এবং বাস্তববাদী মানসিকতা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বিশ্বযাত্রার উদ্দেশ্যে। তাঁর বীরত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে রয়েছে উইন্ডমিলের সঙ্গে লড়াইয়ের চেষ্টা। যেগুলোকে তিনি দৈত্য ভেবে ভুল করেছিলেন, এমনকী এক পাল ভেড়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামেন তিনি। এই সাহিত্যকে প্রথম আধুনিক উপন্যাস বলে বিবেচনা করা হয়।
ইনফিনিট জেস্ট
Infinite Jest
ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস
ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসের এই উপন্যাসটি অদূর ভবিষ্যতের ডিস্টোপিয়াকে ঘিরে লেখা হয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো—এই তিন দেশ উত্তর আমেরিকান জাতিগত সংস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়। ডিস্টোপিয়া হল সাহিত্যের একটি শাখা, এমন একটি কাল্পনিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো নিয়ে কথাহয়, যেখানে কেবল দুর্ভোগ আর অবিচারের রাজত্ব। গল্পটি শুরুএকটি টেনিস অ্যাকাডেমি ও মাদকাসক্ত নিরাময় সংস্থাকে কেন্দ্র করে।
আ সুইটেবল বয়
A Suitable Boy
বিক্রম শেঠ
বিক্রম শেঠের ‘আ সুইটেবল বয়’ উপন্যাসটি ১৯৫০-এর দশকের গোড়ার দিকে ভারতবর্ষ বিভাজনের পরের প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা হয়েছে। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে চারটি একান্নবর্তী পরিবারের ১৮ মাসের গল্প। গল্পের চরিত্র মিসেস রুপা মেহরার একমাত্র মেয়ে লতার জন্য একজন ‘উপযুক্ত পাত্র’ খুঁজে পাওয়ার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়ে যায়।
দ্য স্ট্যান্ড
The Stand
স্টিফেন কিং
দ্য স্ট্যান্ড একটি পোস্ট অ্যাপোক্যালিপটিক হরর-ফ্যান্টাসি ঘরানার বই। যেখানে বায়োলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার বা জৈব যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন অসুখের দ্রুত পরিবর্তনশীল জীবাণু নিয়ে গবেষণা করার কথা বলা হয়েছে। দুর্ঘটনাক্রমে সেই জীবাণুগুলো একদিন একটি সুরক্ষিত গবেষণাগার থেকে বের হয়ে যায়। ক্রমশ সংক্রমিত হয় সারা বিশ্বে। এই মহামারিতে বিশ্বের ৯৯ শতাংশেরও বেশি মানুষ মারা যায়। উপন্যাসটিতে দুটি বিকল্প সমাপ্তি রয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রথম প্রকাশিত ৮০০ পৃষ্ঠার মূল সংস্করণে সমাপ্তি ছিল এক রকম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন