জন্মদিন
খসে পড়া পাতার আড়ালে অনন্ত থাকে যে রং
তার নাম দিতে পারো জন্মদিন
আর যেটুকু আভরণ হয়ে ছুঁয়ে থাকে দিনান্তে
তা অন্য কিছু নয়, তোমার ওষ্ঠের বৈকালিক
লালন গেয়ে উঠলে নিবেদিত হতে হয় আত্মজনে
তখন ভেসে যায় একে একে সকল কর্কটরেখা
এখন হৃদয়ের সমুদ্র অতল লোনাজলে ডুবে আছে!
উৎসেও ক্রমে ক্রমে ফুটে উঠছে মানবেতর তূণ
সমস্ত আশ্বাসগুলো কেমন ছাই ছাই
নিভে আসা আগুনের ভেতরেও তেমন কোন
ফুলকি নেই,যাকে অক্লেশে জ্বালিয়ে আর একবার
নতুন করে গড়ে দিতে পারি মহর্ষির চিরন্তন পথ
অথচ প্রতিদিন পলকের পর পলক গেঁথে
সৃজন করে দিই যে মানবতার প্রাচীর
সেখানে কোন অসূয়া নেই ,নেই কোন চুম্বনহীন প্রীতি।
কলিঙ্গের উপর থেকে ভেসে আসা শোক শুধু
অতন্দ্র প্রহরীর মতো খেলা করে
সমস্ত বাসনা পুড়ে পুড়ে হয়ে ওঠে উপহারের দিন
আর হৃদয়ের লবণাক্ত স্রোত ভেঙে জেগে ওঠে
কবীরের দোঁহা, চৈতন্যবোধ
চন্ডাশোক অশোক স্নাত হয়ে যায় ধর্মাশোকের কাছে,
সমস্ত মনুষ্যত্বহীন গরল দুর্বাশার শাপ ছাড়িয়ে
হয়ে ওঠে পীরবাড়ীর মাজারের সোনালী আকাশ
মৃদু হাওয়ার দমকে সমস্ত ছায়াঘন অক্ষরগুলো তখন
করজোড়ে চিৎকার করে বলে ওঠে আজ জন্মদিন
............................................
গন্তব্য
আমাদেরও পান্থশালা ছিল, যেখানে কবিগানের সঙ্গে
জুড়ে থাকত শীতের ঝুমুর আর
ভানুমতী স্নানে নামলে চঞ্চল হয়ে উঠত সুবর্ণরেখা
চলো আকাশটাকে নামিয়ে এনে বসাই তালপুকুরের পাশে।
হলুদ সর্ষেক্ষেতের উপর থেকে উড়ে যাচ্ছে
যে বলাকার দল তারা আজ এই বিশ্রামক্ষেতে
দিন বদলাক,শুনে নিক স্পন্দন আর পথিকের গান
ভাদুটুসুর পর্ব শেষ হলে তাদের ফিরিয়ে দেবো
সোনাঝরা বিকেলের জংশনে
অদূরে ডেকে ওঠা গাভীর স্বরে নিবিড় ভেসে আসে
আমার বাংলা ও ছেচল্লিশের মায়ের মুখশ্রী
প্রান্তিক কিশোর বলো তুমি কোন পথে যাবে?
হৃদপিন্ডের উপরে যে ঠিকানা আজও
পড়ে নিতে পারো তার কাছে
না পরম্পরা ছাড়িয়ে অহংকারের মাৎস্যন্যায়
........................................
বড়দিন
ইবলিশ এগিয়ে এলেন আমার দিকে, ঈশ্বরও
অথচ উষ্ণ করমর্দন হলো না কারোর সংগে!
নিকানো উঠোনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম ক্ষণিক,
কলাপাতার রোদে রোদে শীতার্ত সংগীত,ব্রহ্ম
মৌনী জাতক আমি
দু'হাত তুলে ডাক দিলাম পিতাকে
সামুদ্রিক তরঙ্গের ভেতর থেকে কে যেন বলে উঠল
আজ বড়দিন,
গর্ভে গর্ভে বেজে উঠল সানাইয়ের সুর আর
দুঃখগুলো পতিত হয়ে ফিরে গেল জনাইয়ের ক্ষেতে
ভাঙা আড়কাঠ থেকে নেমে এলো টুকরো জ্যোৎস্না,
একটা জন্মদিন ঘিরে ক্রমে মহীয়ান হয়ে গেল
গোটা মানবজীবন
................
একতারার বোল
শূন্যতার রংগুলো নিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশ,প্রিয় জন্মভূমি
অথচ হাতে কোন বিশুদ্ধ আবেশ নেই,
যাকে সামনে রেখে লিখে দিতে পারি পীড়িত স্বর!
সমুদ্র থমকে গেছে ! আশংকার মেঘ নিয়ে এখন
বসে থাকেন মা
পড়শি, প্রিয়জনও কোন আশ্বাস দিতে পারে না,
উদাস, একাকি পাখিটি শুধু দৈনন্দিন অভ্যাসে
ঠোঁটে করে অক্ষর নিয়ে উড়ে যায়
দূরভাসে ভেসে আসে শুকিয়ে যাওয়া মানবতার গান!
তখন বড় অচেনা মনে হয় শাদা পারাবতের উড়ান
নিভৃতে ধ্বনিত হয় স্বজনহীন একতারার বোল
কবিতা পাঠান
মনোনীত হলে আপনার লেখা কবিতাও থাকবে এই পোর্টালে। ই–মেল করুন সরাসির টেক্সট ফাইল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন