আগামী ১০ জানুয়ারি প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্পেয়ার’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে। তবে ইতিমধ্যেই সেই বইয়ের বেশ কিছু অংশ ইউরোপের সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে।
আগামী ১০ জানুয়ারি প্রিন্স হ্যারির (Prince Harry, Duke of Sussex) আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্পেয়ার’ (Spare)আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে। তবে ইতিমধ্যেই সেই বইয়ের বেশ কিছু অংশ ইউরোপের সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ‘নেটফ্লিক্স’ ডকুসিরিজে নিজেদের সম্পর্ক ও পরিবার নিয়ে অনেক কথাই খোলসা করেছেন প্রিন্স হ্যারি আর মেগান। সেখানে আকস্মিক রাজপরিবার ছেড়ে এই দম্পতির ২০২০ সালে উত্তর আমেরিকায় পাড়ি জমানোর নেপথ্যে কী ছিল, তা তুলে ধরা হয়। তবে প্রিন্স হ্যারির নতুন বইয়ে আরও নতুন তথ্য থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
‘স্পেয়ার’ ঘিরে ইউরোপের পাঠকমহলে প্রবল উৎসাহ তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে বইটির ফাঁস হওয়া অংশ নিয়ে বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, বইটিতে প্রিন্স হ্যারি তাঁর জীবনের না বলা অনেক কাহিনি তুলে ধরেছেন। সেখানেই তিনি লিখেছেন তাঁর স্ত্রী মেগান মর্কেলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের কারণে প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে বচসা, হাতাহাতি হয় তাঁর। প্রিন্স হ্যারি আরও লিখেছেন, প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম মেগান মর্কেলের উদ্দেশে ‘অত্যন্ত কঠিন’, ‘অসভ্য’ ‘সংসারে ভাঙন ধরিয়েছে’- এমন মন্তব্য করেন। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে উইলিয়াম ও হ্যারির মধ্যে তুমুল বচসা হয়। উইলিয়াম হ্যারির কলার ধরে টানেন, ধাক্কা মেরে ফেলে দেন মাটিতে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, প্রিন্স হ্যারি বইতে দাবি করেছেন, এই ঘটনায় তিনি আহত হন। তাঁর পিঠে গুরুতর চোট লাগে। হ্যারির কথায়, “সব কিছু অত্যন্ত দ্রুত ঘটে যায়। ও আমার কলার ধরে টানে। আমার গলার চেন ছিঁড়ে যায়। আমায় ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। কুকুরের খাবারের বাটির উপরে গিয়ে আমি পড়ি। বাটি ভেঙে আমার পিঠে তার কিছু টুকরো ঢুকে যায়। হতভম্ব হয়ে কয়েক মুহূর্ত আমি মাটিতেই শুয়ে থাকি। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে উইলিয়ামকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলি।”
প্রিন্স হ্যারি অভিনেত্রী মেগান মর্কেলকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই নানা জল্পনা-বিতর্ক শুরু হয়। রাজপরিবারের ‘অংশ’ হলেও, কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় তিনি কোনওদিনই ‘সদস্য’ হয়ে উঠতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছিলেন মেগান। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে প্রিন্স হ্যারি ও মেগান যখন রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে আসার কথা ভাবছিলেন, সেই সময় বচসা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য রাজপরিবার মুখে কুলুপ আঁটে। এই নিয়ে কখনও কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি রাজপরিবারের তরফে।
বইপ্রকাশের আগে অ্যান্ডারসন কুপারের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। সেটি সোমবার মার্কিন টিভি চ্যানেস সিবিএস-এ সম্প্রচারিত হবে। তবে তার আগে সেই সাক্ষাৎকারেরও কিছু অংশ ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সেখানে প্রিন্স হ্যারিকে বলতে শোনা গিয়েছে, বিবাদ মিটিয়ে রাজপ্রাসাদে ফেরার তাঁর কোনও ইচ্ছে নেই। তিনি বলেছেন, “ওঁরা যদি এটাই ভেবে থাকে, তবে আমাদের কোনও না কোনওভাবে খলনায়ক হিসেবে দেখিয়ে যাওয়াটাই বরং ভাল। বিবাদ মিটিয়ে মিলে যাওয়ার কোনও আগ্রহ তাঁদের তরফে দেখানো হয়নি।” তবে ‘তারা’ বলতে কাদের বুঝিয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি হ্যারি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন