‘টাইম শেল্টার’ উপন্যাসটির কেন্দ্রে আলঝাইমারের চিকিৎসা করে এমন একটি ক্লিনিক। আলঝাইমারে আক্রান্ত একজন রোগীর স্মৃতি ফিরে পেতে যে চেষ্টা, তারই কাহিনী উপন্যাসটিতে আবর্তিত হয়েছে।
এবার বুকার পুরস্কার জিতলেন বুলগেরিয়া লেখক জর্জি গোসপোদিনভ ( Georgi Gospodinov)। তাঁর ‘টাইম শেল্টার’ উপন্যাসের জন্য পুরস্কার জেতেন তিনি। প্রথম বুলগেরিয়ান লেখক হিসেবে বুকার জিতে নজির গড়লেন গোসপোদিনভি। পাশাপাশি ‘টাইম শেল্টার’-এক ইংরেজি অনুবাদক অ্যাঞ্জেলা রোডেলকেও বুকার সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। তাঁরা যৌথভাবে এই পুরস্কার পাচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৩ মে) বুকার কমিটি থেকে পরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করেছ। বুকার পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ৫০ হাজার পাউন্ড (৬২ হাজার মার্কিন ডলার)। ‘টাইম শেল্টার’-এর লেখক ও অনুবাদ সমানভাবে এই অর্থ পাবেন।
‘টাইম শেল্টার’ (Time Shelter) উপন্যাসটির কেন্দ্রে আলঝাইমারের চিকিৎসা করে এমন একটি ক্লিনিক। আলঝাইমারে আক্রান্ত একজন রোগীর স্মৃতি ফিরে পেতে যে চেষ্টা, তারই কাহিনী উপন্যাসটিতে আবর্তিত হয়েছে। বুকার সম্মানে সম্মানিত হতে পেরে উচ্ছ্বসিত ঔপন্যাসিক ও কবি গোসপোদিনভ। তিনি জানান, তাঁর এই উপন্যাসটি লেখার পিছনে টমাল ম্যান এবং মার্সেল প্রুস্টের মতো লেখকদের অনুপ্রেরেণা কাজ করেছে। এমনকী, ঈগলস, দ্য বিটলস এবং দ্য ডোরসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
গোসপোদিনভের জন্ম ১৯৬৮ সালের ৭ জানুয়ারি বুলগেরিয়ার ইয়াম্বলে। সোফিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বুলগেরিয়ায় আধুনিক জনপ্রিয় লেখকদের মধ্যে গোসপোদিনভ অন্যতম। তাঁর লেখা ২৫টির বেশি বই বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। ‘টাইম শেল্টার’ হচ্ছে গোসপোদিনভের লেখা তৃতীয় বই।
গত বছর প্রিমিও স্ট্রেগা ইউরোপা পুরস্কার জিতেছিল ‘টাইম শেল্টার’-এর ইতালিয় অনুবাদ। সেইসঙ্গে PEN সাহিত্য পুরস্কার এবং ব্রুক-বার্লিন-প্রেস সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কারের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে বইটি। এর আগে গোসপোদিনভের লেখা বইগুলির মধ্যে বিশেষ খ্যাতি পেয়েছিল ‘ন্যাচারাল নভেল’ (১৯৯৯) এবং ‘দ্য ফিজিক্স অফ সরো’ (২০১২)। ‘দ্য ফিজিক্স অফ সরো’ বইটির জন্য জান মিচালস্কি পুরস্কার পেয়েছিলেন গোসপোদিনভ।
গোসপোদিনভর লেখা ছোট গল্প ‘ব্লাইন্ড ভাইশা’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে একটি অ্যানিমেশন ছবি। ২০১৭ সালে সেই ছবি অস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিল। অন্যদিকে, ‘টাইম শেল্টার’ উপন্যাসের ৪৯ বছর বয়সী অনুবাদক রোডেল আমেরিকার মিনেসোটার বাসিন্দা। বর্তমানে থাকেন বুলগেরিয়াতে । তাঁর অনুবাদ করা অনেক কবিতা ও গদ্য আন্তর্জাতিক সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বুলগেরিয়ান সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তাঁকে সম্মানিত করে ওই দেশের সরকার। নাগরিকত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। রোডেল ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন রোডেল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন