‘এবং অধ্যায়’ প্রকাশনার নতুন দু’টি বই মলয় রায়চৌধুরীর লেখা ‘হাংরি যুগ’ এবং সিদ্ধার্থ সিংহের গল্প সংকলন ‘চোর ধরার মেশিন এবং ৩৯৯’ প্রকাশিত হল।
![]() |
বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সুধাংশু শেখর দে, নলিনী বেরা এবং প্রকাশক ধীমান ব্রহ্মচারী। |
বইয়ের বাজার বা বই পড়ায় পাঠকের আগ্রহ যেমনই হোক, প্রকাশনা জগতের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেই প্রকাশনা জগৎটাই ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। আক্ষেপ দে’জ পাবলিশং-এর কর্নধার সুধাংশু শেখর দে’র। তিনি প্রকাশনা ব্যবসায় আরও বেশি অংশগ্রহণের জন্য একদিকে যেমন তরুণ প্রজন্মের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তেমনই তাঁর আক্ষেপ প্রকাশনায় শিক্ষিত ছেলেরা কম আসছে।
শনিবার (১৩ মে) কলেজ স্কোয়ারের কাছে অভিযান বুক ক্যাফেতে দু’টি নতুন বইয়ের উদ্বোধনে সুধাংশুবাবু বলেন, “কেউ যদি প্রকাশনাকে নিজের রুটি-রুজি হিসাবে নিতে পারেন, তবে সেটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এতে রাতারাতি অনেক অর্থ উপার্জন হবে না ঠিকই, কিন্তু এই ব্যবসা মিষ্টি ও সুখের।” এরপরেই তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, “প্রকাশনার জগৎটা ক্রমশঃ ছোটো হয়ে আসছে। শিক্ষিত ছেলেরা প্রকাশনার ব্যবসায় আসছে না। তাছাড়া সৃজনশীল সাহিত্যও কমে যাচ্ছে।” পাশাপাশি, প্রবীণ প্রকাশক বলেন, “কোন বই পাঠকের ভাল লাগবে, কোন বই কেমনভাবে পাঠক নেবে, তা পাঠকই ঠিক করবে। নিষ্ঠার সঙ্গে বই প্রকাশের কাজটি করে যেতে হবে।”
এদিন ‘এবং অধ্যায়’ প্রকাশনার নতুন দু’টি বই মলয় রায়চৌধুরীর লেখা ‘হাংরি যুগ’ এবং সিদ্ধার্থ সিংহের গল্প সংকলন ‘চোর ধরার মেশিন এবং ৩৯৯’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে সুধাংশুবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লেখক সিদ্ধার্থ সিংহ, নলিনী বেরা, সাংবাদিক ও আঞ্চলিক ইতিহাসের গবেষক গৌতম বসু মল্লিক, বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক অধ্যাপক মলয় রক্ষিত, কবি মধুবন চক্রবর্তী, এবং অধ্যায় প্রকাশনা সংস্থার কর্নধার ধীমান ব্রহ্মচারী সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।
সিদ্ধার্থ সিংহ জানান, তাঁর নতুন বইয়ে ৪০০টি অনুগল্প আছে। এগুলি বিভিন্ন সময় একডজন ঝলক গল্প হিসাবে প্যারিস, অসলো ও সিডনি থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে গল্পগুলি ‘খানিকটা বড়দের গল্প’, যদিও অশ্লীল নয়, বলে দ্বিধা ছিল যে আমাদের এখানকার পাঠক এগুলি গ্রহণ করবেন কিনা। তবে ‘উৎসব’ পত্রিকায় এমন একডজন গল্প প্রকাশিত হওয়ার পর সেই দ্বিধা কেটে যায়। সেই গল্পগুলিই সংকলিত হয়েছে এই বইতে।
অন্যদিকে, মলয় রায়চৌধুরীর লেখা ‘হাংরি যুগ’ একটি সময়ের দলিল। ষাটের দশকে হাংরি আন্দোলন নিয়ে এই গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যে একটি আকর হয়ে থাকবে বলে আশাবাদী মলয় রক্ষিত। তিনি বলেন, একসময় যেমন ‘কল্লোল যুগ’ ছিল, বাংলায় ষাটের দশকে ‘হাংরি যুগ’-এ ছিল। কিন্তু, আজকের প্রজন্মের বহু ছেলেমেয়েই হাংরি আন্দোলন সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানে না। এই বইটি থেকে তারা ওই সময়ের পটভূমিতে ওই আন্দোলনের প্রাথমিক বিষয়গুলি জানলে এ সম্পর্কে জানতে আরও আগ্রহী হবে। উল্লেখ্য, হাংরি আন্দোলনের প্রধান হোতা ছিলেন মলয় রায়চৌধুরী।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন