PLAYMATES IN PARADISE : ২৯ বছরের পুরানো Playboy অ‌্যামাজনে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়

‘প্লেয়ব’ ম‌্যগাজিন গোষ্ঠী ১৯৯৪ সালে ‘প্লেমেটস ইন প‌্যারাডাইস’-এর একটি বিশেষ সংখ‌্যা প্রকাশ করে। এতে কভারে ছিলেন সেই সময়কার জনপ্রিয় ন্যুড মডেল কেরি কেন্ডাল (Kerri Kendall), ১৯৯০-এর ‘মিস সেপ্টেম্বর’। 

PLAYMATES IN PARADISE : ২৯ বছরের পুরানো Playboy অ‌্যামাজনে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়

২৯ বছর আগে মাত্র ১৮৬ টাকা বিনিয়োগ করলে আজ ৩৫ হাজার টাকা মালিক হতেন। না মাশাই, আমি শেয়ারবাজারে লগ্নীর কথা বলছি না। জমি-বাড়িতে বিনিয়োগও নয়। এমনকী সোনা কিনে রাখলেও আপনি এত বেশি রিটার্ন পেতেন না।

১৯৯৪ সালে বিখ‌্যাত ‘প্লেবয়’  (Playboy) ম‌্যাগাজিনের একটি বিশেষ সংখ‌্যা ‘প্লেমেটস ইন প‌্যারাডাইস’ (PLAYMATES IN PARADISE) প্রকাশিত হয়। সেই সময় ম‌্যগাজিনটির একটি কপির দাম ছিল ৫.৯৫ ডলার। সেই সময় ডলারের দাম অনুসারে ভারতীয় মুদ্রায় ম‌্যাগাজিনটির দাম ছিল ১৮৬ টাকার কিছু বেশি। এখন ই-কমার্স প্ল‌্যাটফর্মে ম‌্যাগাজিনটি পাওয়া যাচ্ছে। কেই একজন বিক্রেতা তাঁর সংগ্রহে থাকা পুরানো ম‌্যাগাজিনটির ফরাসী সংস্কারণের একটি কপির দাম হেঁকেছেন ৩৫,০৬৭ টাকা।

‘প্লেবয়’ ম‌্যাগাজিন ২০১৭ সাল থেকে নগ্ন ছবি ছাপা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে শুরু থেকেই নারীর নগ্ন ছবি ছাপার জন‌্য বিখ‌্যাত ও বিতর্কিত ‘প্লেবয়’ ম‌্যাগাজিন। কিন্তু কখনও ছবিগুলিতে যৌনতা প্রকট হয়নি, খেয়াল রাখা হয়েছে শিল্পের দিকেই। ‘প্লেবয়’ প্রকাশনা শুরু হয় ১৯৫৩ সালে। তার পর থেকে এই ম‌্যগাজিনের মূল বৈশিষ্ট‌্যই ছিল নগ্ন নারী শরীরের ছবি। বর্তমানে এটি একটি বিরাট সংস্থা এবং ম্যাগাজিন ছাড়াও তারা ওয়েবসাইট এবং হোম ভিডিওর মাধ্যমে ব্যবসা করছে।

মূলত অল্পবয়সী, অবিবাহিত পুরুষদের পছন্দের প্রতি দৃষ্টি রেখে প্লেবয়ের ম্যাগাজিন এবং ওয়েবসাইটে সুন্দরী মহিলাদের নগ্ন ছবি প্রকাশ করা হত। তবে বিবাহিত এবং বেশী বয়সের পুরুষেরাও এর আকর্ষন এড়াতে পারতেন না। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র কিংবা বিবস্ত্র হওয়ার ভঙ্গিমায় মহিলাদের ছবি তোলা হত। মহিলাদের উন্মুক্ত স্তন, নিতম্ব এবং যোনি স্পষ্ট ভাবে দেখালেও তা হার্ডকোর পর্নো ম‌্যগাজিনগুলির মতো জোর করে দেখানো হত না কখনও। বরং স্বাভাবিকভাবে যতটুকু দেখা যায় তাই দেখানো হত।

বিদগ্ধ সমালোচকদের মতে, ‘প্লেবয়’ ম‌্যাগাজিনে প্রকাশিত ছবিগুলি যৌনতা এবং শিল্পের সঠিক মিশেল। নারীশরীর যে কত সুন্দর হতে পারে তা একমাত্র প্লেবয়ের ছবিগুলি দেখলেই বোঝা যায়। ‘প্লেবয়’ ম‌্যাগাজিনের অধিকাংশ মহিলাই ক্যামেরার সামনে অত্যন্ত সাবলীল এবং আত্মবিশ্বাসীভাবে পোজ দিয়েছেন। যদিও তাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রফেশনাল মডেল নন। ছবির ব‌্যাকগ্রাউন্ডেও থাকে বহু ভাবনাচিন্তা। থাকে যথাযত আলোর ব‌্যবহার। প্লেবয়ের ফটোগ্রাফাররাও খুব নামী এবং সুদক্ষ। ‘প্লেবয়’-এর অনেক মডেলই যখন অন্য পত্রিকা বা ওয়েবসাইটের জন্য ছবি তুলেছেন তখন তা প্লেবয়ের মতো অত সুন্দর হয় নি।

তবে আমজনতার শিল্পের চাইতে মডেলদের যৌন আবেদনই বেশি আকৃষ্ট করত। লাস‌্যময়ীদের নগ্ন, অর্ধনগ্ন ছবিতে বিনিদ্র রজনী যাপনের জন‌্য কেউ কেউ তখনকার সময়ে একটি কপির জন‌্য অধিক খরচ করতেও রাজি ছিল।

সেই ‘প্লেয়ব’ ম‌্যগাজিন গোষ্ঠী ১৯৯৪ সালে ‘প্লেমেটস ইন প‌্যারাডাইস’-এর একটি বিশেষ সংখ‌্যা প্রকাশ করে। এতে কভারে ছিলেন সেই সময়কার জনপ্রিয় ন্যুড মডেল কেরি কেন্ডাল (Kerri Kendall), ১৯৯০-এর ‘মিস সেপ্টেম্বর’। সংখ‌্যাটি প্রকাশিত হতেই আমেরিকা-সহ ইউরোপ জুড়ে হইচই পড়ে যায়। ম‌্যাগাজিনটির একটি কপি সংগ্রহের জন‌্য উড়তে থাকে টাকা। শোনা যায়, চড়া দামে ব্ল‌্যকও হয় বহু কপি। যারা সে সময় একটি বা দু’টি কপি সংগ্রহ করতে ফেলেছিলেন, তাঁরা আজ মালামাল হয়ে যেতে পারেন। ‘প্লেবয়’ ম‌্যগাজিনের ১৯৭৮ সালের আগস্ট সংখ‌্যার একটি কপি বিক্রির জন‌্য অ‌্যামাজনের সাইটে তালিকাভুক্ত হয়েছে। তার দাম রাখা হয়েছে ১৬,৫৩৯ টাকা। প্রকাশকালে ম‌্যাগাজিনের ওই কপিটির দাম ছিল ২ ডলার। যে সংস্করণে ন্যুড মডেল ভিকি উইটের (Vicki Witt)-এর একাধিক নগ্ন ছবি প্রকাশিত হয়েছিল।

PLAYMATES IN PARADISE : ২৯ বছরের পুরানো Playboy অ‌্যামাজনে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায় ২

প্লেবয়ের জন্য প্রফেশনাল মডেল ছাড়াও বহু অভিনেত্রী, খেলোয়াড়, সাংবাদিক, শিক্ষিকা, ছাত্রী এবং অফিসার বিভিন্ন সময় ম‌্যাগাজিনের জন‌্য নগ্ন অবস্থায় ক‌্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত অথবা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। বড় বড় সংস্থা, যেমন ওয়ালমার্ট এবং ম্যাকডোনাল্ডসের মহিলা কর্মচারীদের জন্য ‘প্লেবয়’ নানা নগ্ন ছবির সিরিজ করেছে। মার্কিন বৃহৎ শিল্প সংস্থা  এনরন যখন বন্ধ হয়ে যায়,  প্লেবয় এনরনের বেশ কিছু মহিলা কর্মচারীকে মডেলিঙের সুযোগ দিয়েছিল। এছাড়াও প্লেবয় বহু যমজ বোনের একসঙ্গে ছবি প্রকাশিত করেছে। প্লেবয় যে কীভাবে এত সুন্দরী যমজ বোন যোগাড় করে তা আরও এক অবাক করা বিষয়।

 

আরেক দিক থেকে বিচার করলে ‘প্লেবয়’ নারীস্বাধীনতারও প্রতীক। কারণ এখানে সব মহিলাই স্বইচ্ছায় নিজেদের নগ্ন ছবি তোলেন। মেয়েদের শরীরের মালিক যে মেয়েরাই তাদের স্বামী, সমাজ অথবা ধর্ম নয়, তা প্লেবয়ের জন্য পোজ দিয়ে তাঁরা প্রমাণ করেন । তাঁদের শরীর নিয়ে তাঁরা কী করবেন সেটা তাঁদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার । তাঁদের অনেকরই বক্তব্য যে তাঁদের যদি দেখাবার মতো সুন্দর শরীর থাকে তাহলে তাঁরা তা অবশ্যই দেখাবেন তাকে আজীবন ঢেকে রাখার কোনও অর্থ হয় না। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন