যার সামনে দাঁড়িয়ে আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন– যে কোন সম্পর্কেই কোনটা আপনার কাছে অগ্রাধিকার পাবে– ‘কম্প্রোমাইস’, নাকি ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং’?
মঞ্চে একটা নাটক প্রযোজনা একাধারে যেমন সমাজ শিক্ষার বা সামাজিক সচেতনতার বিষয়, তেমনই বিনোদনের বিষয়ও বটে। নাটকের বিনোদন গুণটিকে অস্বীকার করা যায় না। সেই সঙ্গে নাটক চলমান সমাজের চিত্র তুলে ধরবে এটাও কাম্য। পাশাপাশি, নাটক দর্শকের সামনে নিয়ে আসবে সেই বাস্তব ছবির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে থাকা মানুষগুলোর সুখ, দুঃখ, বেদনা, আনন্দঘন মুহূর্তগুলো। যা কিছুটা মন ভালো করা বা ‘মন কেমন করে ওঠা”র অনুভূতি জাগিয়ে দেবে।
‘কসবা অনুপ্রাশ’ প্রযোজিত নতুন নাটক ‘অপশন’ আজকের দিনে, সোশ্যাল মিডিয়া-নির্ভর সুখ-দুঃখ-অনুভূতির দিনে দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যার সামনে দাঁড়িয়ে আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন– যে কোনও সম্পর্কেই কোনটা আপনার কাছে অগ্রাধিকার পাবে– ‘কম্প্রোমাইস’, নাকি ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং’?
গল্পটি খুব সাদামাটা। এক বিপত্নিক, চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত ভদ্রলোক তাঁর যুবতী মেয়ের জন্য পাত্রের সন্ধান করছেন। এক বন্ধুর পরামর্শে একটি ‘কর্পোরেট ঘটক’ সংস্থায় রেজস্ট্রেশন করেছেন। এক সকালে সেই সংস্থার ‘হাই-টেক’ রিপ্রেজেন্টিটিভ এসে হাজির বাড়িতে। পাত্রের জন্য তার কাছে হাজারো অপশন। মেয়ের অনুপস্থিতিতে তারা হয়ে সেই অপশন থেকে ‘সেরাটা’ বেছে নেওয়ার দায়িত্ব পড়ে সেই ষাটোর্ধ বৃদ্ধের কাছে।
আপনার মেয়ে যখন ছাদনাতলায় বিয়ের পিঁড়েতে বসবে, তখন তার উল্টোদিকে যে ছেলেটি থাকবে, সে যেন একদম কুমোরটুলির মাল হয়। মানে অর্ডার মোতাবেক, যেমনটি চেয়েছিলেন ঠিক তেমনটি। অপশন মিলিয়ে মিলিয়ে একদম তার পছন্দ মতো। দু’টো সম্পূর্ণ অচেনা মানুষকে অতি চেনার মতো করে প্রেজেন্ট করা কী চাট্টিখানি কথা স্যর! এটাও একটা অ্যাচিভমেন্ট! সেই রিপ্রেজেন্টিটিভের কথা, এই বিশ্বায়নের যুগে বিয়ে এবং দাম্পত্যর অর্থটাই বদলে গিয়েছে। মানতে নারাজ বৃদ্ধ। রিপ্রেজেন্টিটিভ বলেন, দাম্পত্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা কম্প্রোমাইসের কোনও মূল্য নেই। কারণ, তখন বিপরীতে থাকা মানুষটি তাকে দুর্বলতা ধরে নেয়। এভাবেই এগিয়ে নাটক। তবে শেযপর্যন্ত বৃদ্ধকি নিজেকেই সত্য প্রমাণ করতে পারলেন। সেটা না হয় নাটকেই দেখবেন।
শুক্রবার (১৯ মে) দক্ষিণ কলকাতার তপন থিয়েটারে দ্বিতীয় শো হয়ে গেল ‘অপশন’-এর। পরবর্তী শো ২০ জুন। তপন থিয়েটার।
কসবা অনুপ্রাসের ‘অপশন’
অভিনয়ে
রমেন চৌধুরি: অনুপ সাহা
এজেন্ট নম্বর ২১: প্রবীর আদিত্য
এজেন্টের অ্যসিস্ট্যান্ট: বিপুল রায়
নীলাক্ষী চৌধুরি: পূজা দত্ত
মেয়ের প্রেমিক: প্রণব দাস
আবহ নির্মাণ: বিপুল রায়
রূপসজ্জা: পূজা দত্ত
আবহ প্রক্ষেপণ: বিজন চক্রবর্তী
আলো প্রক্ষেপণ: প্রণব দাস
মঞ্চ সামগ্রী অঙ্কণ: শুভজিৎ দাস
আলো, মঞ্চ, গীত রচনা, কন্ঠ, নাটক ও নির্দেশনা: সৌভিক গাঙ্গুলি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন