গবেষক দীপঙ্কর রায়ের হাত ধরে সৃষ্টি হল ছ’টি নতুন রাগ

বইটিতে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এমন কিছু তথ‌্য রয়েছে, যা শুধু সঙ্গীত জগতের মানুষের নয়, সেইসঙ্গে সঙ্গীতপ্রেমীরাও খুব সহজে এইসব বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে পারবেন।


ধ্বনী বা শব্দের মধ্যে যে মধুরতা সেই মধুরতার সঙ্গে স্বর বা বর্ণ বা বাণীর মিশ্রণে চিত্তকে আকর্ষণ করে মনকে আনন্দ দেয় এমন সৃষ্টিকে রাগ বলে।শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে আরও ছ’টি রাগের সৃষ্টি হল। এই ছ’টি রাগের জন্ম দিয়েছেন সঙ্গীত গবেষক, শিল্পী ও লেখক দীপঙ্কর রায়। রবিবার (২৮ মে) নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সারদা সভাগৃহে দীপঙ্কর রায়ের নতুন রাগের সেই বই ‘নতুন রাগের সন্ধানে’ প্রকাশিত হল।এক উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন করে বিদুষী মীনা বন্দ্যোপাধ‌্যায়।

‘নতুন রাগের সন্ধানে’ বইটিতে উল্লেখ আছে নতুন ছয়টি রাগ ও তিনটি নতুন তালের। নতুন ছয়টি রাগ হল– মধুরং. পম্পাবতী, আহিরীনন্দন, মেঘদরবার, সুরবিলাস ও হেমীকা। নতুন সৃষ্টি তিনটি তাল হল– রেশমী- ১১ মাত্রা, নবার্ধ-৯.৫ মাত্রা, ঈশ্বরী- ৯ মাত্রা। বইয়ের লেখক দীপঙ্কর রায় বলেন, “বইটি মূলত গবেষণামূলক একটি দলিল। যেখানে নতুন ছয়খানি রাগ ও তিনটি নতুন তাল সঙ্গে কিছু পরিচিত রাগের বন্দিশ, তারানা ও বাংলা রাগপ্রধান গানের সমারোহে লেখা।” তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ ১১-১২ বছর নতুন রাগ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা ও পড়াশোনা, পূর্বের সকল রাগের উৎপত্তি, সৃষ্টি রহস‌্য এবং রাগের সকল বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করা, পড়াশোনা করা, রাগের ভাব জানার চেষ্টা করা, রাগ বিষয়ক নিয়ম-কানুন জানা, এবং গুণীজনদের সাহায‌্য নেওয়া এবং খাতায় লিখে রাখা– এইভাবে পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ‌্যমেই এখদিন সুর খেলে গেল প্রাণে। যা আমাকে নতুন পথ দেখানো ও মনের তৃপ্তি দিল। এই সুদীর্ঘ বছর পরীক্ষার মাধ্যমে তৈরি হল বেশ কিছু ‘নতুন রাগ’ যা উত্তর ভারতীয় রাগ-রাগিনীর মধ্যে রাখা যায়। আমি আমার সৃষ্ট ‘রাগ’গুলির আলোচনা করে সকল বন্দিশ স্বরলিপি বদ্ধ করেছি।

বইটিতে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এমন কিছু তথ‌্য রয়েছে, যা শুধু সঙ্গীত জগতের মানুষের নয়, সেইসঙ্গে সঙ্গীতপ্রেমীরাও খুব সহজে এইসব বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে পারবেন। প্রতিটি রাগের স্বরলিপীর সঙ্গে সেই রাগ সম্পর্কে বিবরণ, ব‌্যবহার ও শিল্পীর তুলিতে অলঙ্করণ তুলে ধরা হয়েছে।

যেমন,– ‘মধুরং’ রাগ প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে– এই রাগের মধ্যে দিয়ে একটি নিষ্কাশ প্রেমের ছবি প্রকাশ পাবে। প্রিয়-প্রিয়া মা-বাবা – আত্মীয়-স্বজন – ভববান এমন সকলের সঙ্গে ভক্তি প্রেমের ছবি আঁকার চেষ্টা করা হবে। এই মধুর প্রেমে মন শান্ত ও আনন্দিত হবে।মনে বিভিন্ন উদাসীনতার রং ছড়াবে এবং নিজ নিজ পুলকিত হবে। এ রস গ্রহণে সারাক্ষণ মিষ্ট ও সুগন্ধ ভাবের প্রতিচ্ছবি মুখমণ্ডল ও সর্বাঙ্গে প্রকাশ পাবে। মধুরম রাগ শিল্পী দীপঙ্কর রায়ের প্রথম সৃষ্টি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন