তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জোক’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। সেখানে তৎকালীন চেকোস্লোভাক কমিউনিস্ট শাসনের রূঢ় চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
![]() |
‘দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অফ বিইয়িং’-এর লেখক মিলান কুন্দেরার জীবনাবসান |
প্রয়াত বিশ্ববন্দিত লেখক মিলান কুন্দেরা। ‘দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অফ বিইয়িং’-এর লেখক মঙ্গলবার প্যারিসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। চেক ও ফরাসি ভাষায় মূলত লিখেছেন মিলান কুন্দেরা। তাঁর লেখা বিশ্বের চল্লিশটিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে । মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৪ । দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি।
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম কালজয়ী লেখক ১৯২৯ সালের ১ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেছিলেন চেকস্লাভাকিয়ার ব্রানোতে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ফ্রান্সে চলে যান। দেশের সরকারের সঙ্গ মতানৈক্যের জন্য তিনি দেশ ত্যাগ করেন। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে তিনি ফ্রান্সের বাসিন্দা। একাধিকবার নোবেল পুরস্কারের জন্য তালিকায় নাম উঠলেও কখনও এই সম্মান তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে লেখকের অনুরাগীদের মনে অভিমান রয়েই গেল।
মিলান কুন্দেরা ছিলেন প্রচারবিমুখ। তিনি মনে করতেন, লেখকদের সাক্ষাৎকার দিতে নেই। তাঁদের কথা প্রস্ফুটিত হওয়া উচিত তাঁদের কলমেই। তিনি তাঁর লেখনির ভাষা, ভঙ্গি দিয়ে পাঠকমন নিয়ে খেলা করতে ভালবাসতেন। পাঠক যেন বাধ্য হয়েই তাঁর গল্প বলার ধরনের সঙ্গে নিজের কল্পনাশক্তি দিয়ে নিরীক্ষণের পথে হাঁটতে পারে। কুন্দেরা মনে করতেন, পাঠকের কল্পনাই লেখককে সম্পূর্ণ করে। লেখক লিখবেন, আখ্যান তৈরি করবেন, চরিত্রগুলিকে বুনবেন, কিন্তু বাকি কাজ পাঠকেরই।
কুন্দেরার লেখার বৈশিষ্ট্য ছিল, দৈনন্দিন বাস্তবতার সঙ্গে নানা তত্ত্ব ও দর্শন মিলিয়ে দেওয়া। এ বিষয়ে তিনি সৃষ্টি করেছিলেন শক্তিশালী স্বতন্ত্র ধারা। পেয়েছেন বহু পাঠকের প্রশংসা। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জোক’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। সেখানে তৎকালীন চেকোস্লোভাক কমিউনিস্ট শাসনের রূঢ় চিত্র তুলে ধরেন তিনি। এই বইটি ছিল দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে নির্বাসিত ভিন্নমতাবলম্বী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠার পথে তাঁর প্রথম ধাপ। ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সের দৈনিক ল্য ম্যঁদ–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘তাঁর কাজকে রাজনৈতিক আখ্যা দেওয়াটা অতি সরলীকরণ এবং তা করা হলে, তাঁর লেখার প্রকৃত তাৎপর্যকে আড়াল করা হয়।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন