প্রকাশিত হল ষাট বছরের শিল্পবিপ্লবের উপন্যাস 'চাকা ঘোরার আগে'

প্রমথনাথ বসু। তাঁর আবিষ্কারের ফসল দুটি প্রাকৃতিক লৌহ ভান্ডারের একটিকে ব্যবহার করে ১৯১১ সালে সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোগে জামশেদপুরের সাকচি অঞ্চলে নির্মিত হল প্রথম লৌহ ইস্পাত কারখানা। তারপর...

বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে লেখিকা মৈত্রী রায় মৌলিক ও অন‌্যান‌্যরা

স্বপন কুমার দাস

ঊনবিংশ শতকের মধ্যকাল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সদ্য নিযুক্ত গভর্নর লর্ড ডালহৌসি। একের পর এক রাজ্যগুলিকে কোম্পানি শাসনের আওতায় নিয়ে আসছেন। তখনও কৃষক বিদ্রোহ ছাড়া তেমন কোনো জোরালো আন্দোলন সংঘটিত হয়নি। সেই সময় চালু হলো রেল ব্যবস্থা। প্রয়োজন হয়ে পড়ল কয়লার জোগান। ১৮৫১ সালে এক আইরিশ অধ্যাপক এলেন কয়লার অনুসন্ধানে। কিন্তু প্রয়োজন ভারতীয় ভূখণ্ডের ভূতাত্বিক মানচিত্র। শুরু হল মানচিত্র নির্মাণের কাজ।

১৮৮০ সালে অনুসন্ধান দলে যোগ দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গার গৈপুর অঞ্চলের কৃতী সন্তান প্রথম নেটিভ অফিসার প্রমথনাথ বসু। তাঁর আবিষ্কারের ফসল দুটি প্রাকৃতিক লৌহ ভান্ডারের একটিকে ব্যবহার করে ১৯১১ সালে সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোগে জামশেদপুরের সাকচি অঞ্চলে নির্মিত হল প্রথম লৌহ ইস্পাত কারখানা। তারপর সবই ইতিহাস, আধুনিক সভ্যতার সূচনার সন্ধিক্ষণ। ১৮৫১ থেকে ১৯১১ দীর্ঘ ষাট বছরের শিল্প বিপ্লব। ভারতকে এক নতুন দিশা দেখিয়েছিল। জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর মৈত্রী রায় মৌলিক সেই শিল্প বিপ্লবের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা উপন্যাসের আকারে নিয়ে এলেন সদ্য প্রকাশিত ‘চাকা ঘোরার আগে’ বইখানিতে। ভূতাত্ত্বিক প্রমথনাথ বসুর স্মৃতি বিজড়িত গোবরডাঙ্গার গৈপুর স্থিত পৈতৃক ভিটায় ভাইজি শোভনা রানী বসু মিত্রের হাতে বইখানি তুলে দিয়ে গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করলেন লেখিকা।

তরুণ সংঘের প্রমথনাথ বসু স্মৃতি কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোবরডাঙ্গা পৌরসভার পৌরপ্রধান শংকর দত্ত, জাতীয় শিক্ষক নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্লাবের সভাপতি সুশান্ত পাল চৌধুরী, পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুভাষ মিত্র, প্রধান শিক্ষক অশোক পাল, কালিপদ সরকার, সুবল চন্দ্র দাস, মনোতোষ বিশ্বাস, দূর্বা প্রকাশনীর প্রকাশক ও লেখক পূর্ণেন্দু শেখর মিত্র সহ বিশিষ্ট গুণীজনেরা। এই বইখানি লেখিকার নবম গ্রন্থ এবং আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত চতুর্থ গ্রন্থ।
চাকা ঘোরার আগে । লেখিকা- মৈত্রী রায় মৌলিক । আনন্দ পাবলিশার্স । দাম- ৫০০ টাকা