Flight 513 : অলৌকিক রহস্য! ৩৫ বছর পর অদৃশ‌্য হওয়া বিমান ফিরল ৯২ নরকঙ্কাল নিয়ে

৯২ যাত্রী নিয়ে আকাশে ওড়ার ৩৫ বছর পর মাটি ছুঁয়েছিল সান্তিয়াগো ফ্লাইট ৫১৩! ভিতরে সারি সারি কঙ্কাল, রহস্য আজও।

Flight 513 : অলৌকিক রহস্য! ৩৫ বছর পর অদৃশ‌্য হওয়া বিমান ফিরল ৯২টি নরকঙ্কাল নিয়ে

১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, জার্মানির অ্যাকেন (Aachen) বিমানবন্দর থেকে ব্রাজিলের পোর্ট অ‌্যালেগ্রা শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় একটি যাত্রীবাহী বিমান—সান্তিয়াগো ফ্লাইট ৫১৩ (Santiago Flight 513)। প্রথমে সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। পাইলট বা এটিসি কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ‌্য করেনি। ককপিটে ছিলেন অভিজ্ঞ পাইলট মিগুয়েল ভিক্টর কার্লেস (Miguel Victor Cury)। তবে মাঝ আকাশে বিমানটি আচমকা এটিসি থেকে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শত চেষ্টাতেও সেটির সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। যাত্রী সমেত বিমানটি কোথায় কীভাবে হারিয়ে গেল, তা জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট দুই দেশের সরকার ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশ মিলে দীর্ঘ সময় বিমানটির অনুসন্ধান করে। এর কোনও হদিশ না পাওয়ায় বিশেষজ্ঞ দল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে বিমানটি হয়তো মাঝ আকাশে বিস্ফোরণে ধংস হয়ে গিয়েছে। তদ্ন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। সান্তিয়াগো ফ্লাইট ৫১৩ বিমানটিতে মোট ৯২ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। তাদের সবাইকেই নিখোঁজ ঘোষণা করা হয়।


বিশ্বের বিমান পরিবহণের ইতিহাসে যতগুলি রহস‌্যজনক ঘটনা রয়েছে, সান্তিয়াগো ফ্লাইট ৫১৩-র নিরুদ্দেশ হওয়া তার মধ্যে একটি। তবে ওই ঘটনা ‘মিথ’ হয়ে রয়েছে আরও একটি কারণে। ওই ঘটনার ঠিক ৩৫ বছর পর, ১৯৮৯ সালের ১২ অক্টোবর, ব্রাজিলের পোর্ট অ্যালেগ্রে (Port Alegre) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি পুরনো মডেলের বিমান অবতরণ করে। বিমানবন্দর কর্মীরা অবাক হন, কারণ এমন বিমান সেই সময় আর চালানো হত না। চমক আরও বাড়ে যখন বোঝা যায় সেটি নিখোঁজ হওয়া সান্তিয়াগো ফ্লাইট ৫১৩**।

বিমানবন্দরের উপর বিমানটি চক্কর দেওয়ার সময়েই এটিসি থেকে বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়। কিন্তু তাতে কোনও সাড়া পাওয়া যায় না। কিন্তু বিমানটি স্বাভাবিকভাবেই রানওয়েতে অবতরণ করে। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী সন্দেহজনক বিমানটি প্রবেশ করেই চমকে ওঠে। কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁরা দেখেন বিমানের প্রতিটি আসনে একটি করে নরকঙ্কাল বসে আছে—আসনে বেল্ট বাঁধা অবস্থায়। সবচেয়ে ভয়ংকর দৃশ্য ছিল ককপিটে: পাইলটের আসনে ছিল একটি কঙ্কাল, যার হাড়ের হাত স্টিয়ারিং চাকা আঁকড়ে ধরে আছে, ঠিক যেন সে তখনও বিমান চালাচ্ছে।

তবে প্রশ্ন ওঠে—কোন শক্তি এই বিমানটিকে এত নিখুঁতভাবে অবতরণ করাল? বিমানটি রানওয়েতে অবতরণের পরেও সেটির ইঞ্জিন চলছিল। প্রশ্ন ওঠে বিমানটিতে জ্বালানী এল কীভাবে?

এই ঘটনার পরপরই নানা গুজব ও তত্ত্ব ছড়াতে শুরু করে। কয়েকটি প্রখ্যাত থিওরি হল:

টাইম ট্র্যাভেল তত্ত্ব: অনেকের মতে বিমানটি একটি টাইম ওয়ার্প বা টাইম-লোপে প্রবেশ করেছিল। এটি কোনওভাবে সময়ের বাইরে চলে গিয়েছিল এবং ৩৫ বছর পর ফিরে এসেছে।

প্যারালাল ইউনিভার্স বা ডাইমেনশন থিওরি: কেউ কেউ বলেন, এটি অন্য কোনও সময়-জগত বা ডাইমেনশনের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিল।

UFO বা এলিয়েন হস্তক্ষেপ: কিছু কনস্পিরেসি থিওরিস্টের মতে, বিমানটিকে Alien spacecraft দ্বারা অপহরণ করা হয়েছিল এবং তারা ৩৫ বছর পর এটিকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু সত্যতা কতটা?

এই ঘটনার ব্যাপারে মূলধারার কোনও সংবাদমাধ্যম, গবেষণা সংস্থা বা সরকারি নথিতে কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ মেলেনি। বহু গবেষক ও তদন্তকারী বলেন, এই ঘটনা একটি ইন্টারনেট হোক্স বা গুজব ছাড়া কিছুই নয়। বিশেষ করে The Weekly World News নামে একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকায় ১৯৮৫ সালে প্রথম এই ‘গল্পটি’ প্রকাশিত হয়। যা আজও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে রয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু বছর ধরেই এই ঘটনার ছবি, ভিডিও, বিবরণ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কোনও সরকারি বা প্রমাণভিত্তিক দলিল নেই, যেটি এই ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করে।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন