বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, জোনস হয়ে ওঠেন এক ‘ঈশ্বরস্বরূপ সর্বাধিনায়ক’। নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য ছিল জীবন বাঁচানোর একমাত্র শর্ত।
১৮ নভেম্বর, ১৯৭৮। একটি নির্জন, সবুজে ঘেরা জঙ্গল… কোথাও একপাশে পাখির ডাক, আবার অন্যপাশে মৃত্যুর নিঃশব্দ পদচারণ। দক্ষিণ আমেরিকার গায়ানার সেই গভীর জঙ্গলে গড়ে উঠেছিল এক ‘আধ্যাত্মিক স্বর্গ’, যার নাম জনসটাউন। আর এই স্বর্গেই একদিনে ঝড়ে গেল ৯০৯টি প্রাণ। ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ গণ আত্মহত্যা।
১৯৫০-এর দশকে আমেরিকার ইন্ডিয়ানাপলিস শহরে জন্ম নেয় এক নতুন চার্চ আন্দোলন– Peoples Temple। এর হোতা ছিলেন এক অসাধারণ বক্তা ও ক্যারিশম্যাটিক নেতা, জিম জোনস। তিনি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন দেখাতেন, আর তাঁর কথা শুনে হাজার হাজার মানুষ দলে দলে যোগ দিতেন সেই চার্চে।
১৯৭০-এর দশকে সংবাদমাধ্যম ও প্রাক্তন সদস্যদের অভিযোগে চার্চের উপর নেমে আসে কালো ছায়া। অর্থ জালিয়াতি, শিশুদের ওপর নিপীড়ন, ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। তাঁকে অবশেষ আমেরিকা ছেড়ে পালাতে হয়। জোনস বলেন, “এসো, আমরা এক সমাজতান্ত্রিক স্বর্গ গড়ব, যাকে কেউ দমন করতে পারবে না।”
এভাবেই গড়ে ওঠে Jonestown, গায়ানার এক নিভৃত জঙ্গলে, আমেরিকা থেকে অনেক, অনেক দূরে।
অথচ, জনসটাউনে বাস্তবতা ছিল রূঢ়। দিনের পর দিন কৃষিক্ষেতে পরিশ্রম, রাত্রির অন্ধকারে চলে মর্মান্তিক মানসীক উৎপীড়ন। তার নাম দেওয়া হয় mock suicide drill– যাতে বোঝা যায়, কে কতটা ‘অনুগত’। বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, জোনস হয়ে ওঠেন এক ‘ঈশ্বরস্বরূপ সর্বাধিনায়ক’। নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য ছিল জীবন বাঁচানোর একমাত্র শর্ত।
১৯৭৮ সালের নভেম্বরে ঘটনাপ্রবাহ নতুন মোড় নেয়। আমেরিকার কংগ্রেসম্যান Leo Ryan যান জনসটাউনের অবস্থা তদন্তে। প্রথমে সব শান্ত মনে হলেও, পরদিন কয়েকজন সদস্য কংগ্রেসম্যানকে আড়ালে অনুরোধ করেন তাঁদের সেখান থেকে উদ্ধার করতে। জানান, তাঁদের বন্দি করা হয়েছে।
কংগ্রেসম্যান রায়ানের ফিরে যাওয়ার পথে Jonestown-এর লোফালফা বিমানবন্দরে ঘটে রহস্যের রক্তাক্ত পরিণতি। রায়ান ও তাঁর টিমের চার সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে জোনসের লোকেরা।
ফিরে এসে জোনস ঘোষণা করেন, “আমরা শেষ হয়ে গিয়েছি। এখন একটাই পথ — বিপ্লবী আত্মহত্যা।” প্রথমে শিশুদের মুখে সিরিঞ্জে করে ঢেলে দেওয়া হয় সায়ানাইড, ঘুমের ওষুধ, আর ফলের রস মিশ্রিত মরণমিশ্রণ। তারপর, লাইনে দাঁড়িয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ মৃত্যুবরণ করেন প্রাপ্তবয়স্করা। তাদের চারপাশে সশস্ত্র প্রহরা। কেউ নির্দেশ না মানলে চলবে গুলি।
পরদিন সকালে গায়ানা প্রশাসনের কর্তা এসে দেখেন — পুরো জনসটাউন মৃতদেহে ঢাকা। ৯০৯টি মৃতদেহ, তার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ শিশু। তাদের অনেকেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলেছেন পরস্পরের হাত ধরে।
কয়েকজন রাতের আঁধারে জঙ্গলে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন। আরও কয়েক ডজন সদস্য তখন ছিল গায়ানার অন্য প্রান্তে, এক সাংস্কৃতিক মিশনে। তাঁরাও বেঁচে গিয়েছিলেনয
Jonestown কেবল একটি ‘ধর্মীয় গোষ্ঠীর আত্মহত্যা’ ছিল না, বরং এটি ছিল ‘মানুষকে সম্মোহিত করার চূড়ান্ত ট্র্যাজেডি’। যেখানে এক নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য, ভয়, বিচ্ছিন্নতা আর প্রলোভনে গড়ে ওঠে এমন এক পরিবেশ, যেখানে মৃত্যুই ছিল একমাত্র হয় মুক্তির পথ। অনেকেই বলে থাকেন, Jonestown ছিল একটি মনস্তাত্ত্বিক ‘red flag’ — যার পর সমাজ বুঝতে শিখেছে, কীভাবে নেতার নাম করে নির্মমতা চাপানো যায় বিশ্বাসীদের উপর।
১৯৫০-এর দশকে আমেরিকার ইন্ডিয়ানাপলিস শহরে জন্ম নেয় এক নতুন চার্চ আন্দোলন– Peoples Temple। এর হোতা ছিলেন এক অসাধারণ বক্তা ও ক্যারিশম্যাটিক নেতা, জিম জোনস। তিনি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন দেখাতেন, আর তাঁর কথা শুনে হাজার হাজার মানুষ দলে দলে যোগ দিতেন সেই চার্চে।
১৯৭০-এর দশকে সংবাদমাধ্যম ও প্রাক্তন সদস্যদের অভিযোগে চার্চের উপর নেমে আসে কালো ছায়া। অর্থ জালিয়াতি, শিশুদের ওপর নিপীড়ন, ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। তাঁকে অবশেষ আমেরিকা ছেড়ে পালাতে হয়। জোনস বলেন, “এসো, আমরা এক সমাজতান্ত্রিক স্বর্গ গড়ব, যাকে কেউ দমন করতে পারবে না।”
এভাবেই গড়ে ওঠে Jonestown, গায়ানার এক নিভৃত জঙ্গলে, আমেরিকা থেকে অনেক, অনেক দূরে।
অথচ, জনসটাউনে বাস্তবতা ছিল রূঢ়। দিনের পর দিন কৃষিক্ষেতে পরিশ্রম, রাত্রির অন্ধকারে চলে মর্মান্তিক মানসীক উৎপীড়ন। তার নাম দেওয়া হয় mock suicide drill– যাতে বোঝা যায়, কে কতটা ‘অনুগত’। বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, জোনস হয়ে ওঠেন এক ‘ঈশ্বরস্বরূপ সর্বাধিনায়ক’। নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য ছিল জীবন বাঁচানোর একমাত্র শর্ত।
১৯৭৮ সালের নভেম্বরে ঘটনাপ্রবাহ নতুন মোড় নেয়। আমেরিকার কংগ্রেসম্যান Leo Ryan যান জনসটাউনের অবস্থা তদন্তে। প্রথমে সব শান্ত মনে হলেও, পরদিন কয়েকজন সদস্য কংগ্রেসম্যানকে আড়ালে অনুরোধ করেন তাঁদের সেখান থেকে উদ্ধার করতে। জানান, তাঁদের বন্দি করা হয়েছে।
কংগ্রেসম্যান রায়ানের ফিরে যাওয়ার পথে Jonestown-এর লোফালফা বিমানবন্দরে ঘটে রহস্যের রক্তাক্ত পরিণতি। রায়ান ও তাঁর টিমের চার সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে জোনসের লোকেরা।
ফিরে এসে জোনস ঘোষণা করেন, “আমরা শেষ হয়ে গিয়েছি। এখন একটাই পথ — বিপ্লবী আত্মহত্যা।” প্রথমে শিশুদের মুখে সিরিঞ্জে করে ঢেলে দেওয়া হয় সায়ানাইড, ঘুমের ওষুধ, আর ফলের রস মিশ্রিত মরণমিশ্রণ। তারপর, লাইনে দাঁড়িয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ মৃত্যুবরণ করেন প্রাপ্তবয়স্করা। তাদের চারপাশে সশস্ত্র প্রহরা। কেউ নির্দেশ না মানলে চলবে গুলি।
পরদিন সকালে গায়ানা প্রশাসনের কর্তা এসে দেখেন — পুরো জনসটাউন মৃতদেহে ঢাকা। ৯০৯টি মৃতদেহ, তার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ শিশু। তাদের অনেকেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলেছেন পরস্পরের হাত ধরে।
কয়েকজন রাতের আঁধারে জঙ্গলে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন। আরও কয়েক ডজন সদস্য তখন ছিল গায়ানার অন্য প্রান্তে, এক সাংস্কৃতিক মিশনে। তাঁরাও বেঁচে গিয়েছিলেনয
Jonestown কেবল একটি ‘ধর্মীয় গোষ্ঠীর আত্মহত্যা’ ছিল না, বরং এটি ছিল ‘মানুষকে সম্মোহিত করার চূড়ান্ত ট্র্যাজেডি’। যেখানে এক নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য, ভয়, বিচ্ছিন্নতা আর প্রলোভনে গড়ে ওঠে এমন এক পরিবেশ, যেখানে মৃত্যুই ছিল একমাত্র হয় মুক্তির পথ। অনেকেই বলে থাকেন, Jonestown ছিল একটি মনস্তাত্ত্বিক ‘red flag’ — যার পর সমাজ বুঝতে শিখেছে, কীভাবে নেতার নাম করে নির্মমতা চাপানো যায় বিশ্বাসীদের উপর।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন