তোজোদের পিলে চমকে দিয়ে মানুষের ভাষায় জানোয়ারটা বলে উঠল, 'মুড়ি-বেগুনিটা আগে শেষ করতে দে। তারপর বল দিচ্ছি।' জানোয়ার কী করে মানুষের ভাষায় কথা বলছে!
আজ তোজো সিরিজ তৃতীয় গল্প। প্রথমটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে : তোজো-রোনাল্ডো দেখা এবং দ্বিতীয়টি পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে : ছায়া-দেশে তোজো
রোজকার মতো আজও তোজোদের ক্রিকেট বলটা বিশাল পাঁচিলটা টপকে পাশের রহস্যে মোড়া পোড়ো বাড়িতে গিয়ে পড়ল। বিকেলের আলো ক্রমশঃ কমছে। বলটা পান্তুর। সে তোজো বাহিনীর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। মাত্র সাত বছর।
প্রতিদিনই বিকেলে পান্তু, তোজো, লালু, ভোলা, নিশুরা তোজোদের বাড়ির সামনের ছোট মাঠটায় ক্রিকেট খেলে। সবাইকে বলা হয়, জোরে শট না মারতে। কিন্তু খেলার সময় কী আর অত সাবধানী থাকা যায়! আজ লালুর লোপ্পা ডেলিভারিটা পেয়ে ভোলা এমন উঁচুতে বলটা তুলে দিল যে দশ ফুট সমান পাঁচিল টপকে সেটা ওই নির্জন, নিস্তব্ধ বাড়ির দিকে উড়ে গেল।
তবে রহস্যের ব্যাপার হল, রোজই বলটা খানিকক্ষণ পরই ওপার থেকে কেউ একজন ছুঁড়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। কে দেয়, ওরা জানে না। তাকে ওরা দেখেনি। ভেবেছে, হয়তো ও বাড়ির কোনও বাসিন্দা হবে। তবে কে সে?
আর পুরো বাড়িটা ঘিরেই যে রহস্যের অন্ধকার। তোজো দুদিন তাদের ফ্ল্যাটবাড়ির ছাদে উঠে পাঁচিলের ওপারটা দেখেছে। গাছগাছালি, জঙ্গলের মাঝখানে পলেস্তারা খসে যাওয়া জরাজীর্ণ, দেওয়ালে ফাটল ধরা দোতলা বাড়িটা। জানালা, দরজা বন্ধ। তবে সন্ধ্যার দিকে একটা জানালা কখনও সখনও খোলে। ঘরে হ্যারিকেনের আবছা আলোয় ভাসা ভাসা দেখা যায়, আলখাল্লা জাতীয় পোশাক পরে ঘোরাফেরা করছে একমুখ দাড়িভর্তি একটা লোক। রাতে বাড়ি থেকে বাঁশির শব্দ শোনা যায়। একদিন তোজো আধো আলো, আঁধারে দেখেছিল, চিড়িয়াখানার বাবুর মতো দেখতে লোমস চেহারার কোনও জানোয়ার হেলেদুলে বাড়ির ভিতরে ঢুকছে।
তবে কি জানোয়ারটাই বল ছুঁড়ে ফেরত দেয়? তোজোর জানা নেই। আর এসব কথা তোজো বাড়ির লোকজন তো দূরের কথা, খেলার সাথীদেরও বলেনি, পাছে সবার মুখে মুখে কথাটা জানাজানি হয়। সে নিজেই রহস্যভেদ করার চেষ্টা করবে, ঠিক করেছে। না, শুধু একজনকে ব্যাপারটা বলেছে, তার সুবীর মামাকে। তিনি গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার।
সব শুনে মামা বলেছেন মাঝেমধ্যে ছাদে উঠে বাড়িটায় নজর রাখতে। আর পাশের বাড়ির সুষমা ঠাকুমা, পাড়ার প্রায় সব প্রতিবেশীর বাড়িতেই যাঁর অবাধ প্রবেশাধিকার, তিনি সেদিন মা-কে বলেছিলেন, ও বাড়িতে অশরীরী আত্মা ঘোরাফেরা করে। ওদিকে যাওয়া তো দূরের কথা, না তাকানোই ভাল।
আজ কিন্তু দশ মিনিট কেটে গেলেও বলটা ফেরত এল না। এদিকে পান্তু কান্নাকাটি শুরু করেছে। বলটা ফেরত চাই, দিতেই হবে, জেদ ধরেছে অবুঝ বাচ্চাটা। ওকে বুঝিয়েও ঠান্ডা করা যাচ্ছে না।
তোজো তখন ওদের দুটো বাড়ির পরের বাড়ির লাদেনদাকে ফোন করল। বিপদে, আপদে লাদেনদাই ওদের ভরসা। ছোটবেলায় দস্যিপনার জন্য লাদেন নামটা দেওয়া হয়েছিল তাকে। ছোটবেলায় একবার লাদেনদা নাকি পাড়ায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে ভিড়ের মধ্যেই মায়ের হাত ছাড়িয়ে দর্শকদের চেয়ারের তলা দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে একেবারে সামনে গিয়ে মঞ্চে উঠে পড়েছিল।
তোজোর মুখে সংক্ষেপে ঘটনাটা শুনে 'আমি ৫ মিনিটে আসছি', বলল লাদেনদা। এদিকে পান্তুর কান্না থামেনি। লাদেনদা এসে বলল, একটা মই জোগাড় করতে পারিস! তোজোদের বাড়িতে রংয়ের কাজ চলছে। মিস্ত্রীরা প্রায় ৮ ফুট লম্বা একটা মই নিয়ে এসেছে। তোজো সেটাই মায়ের নজর এড়িয়ে লাদেনদাকে দিয়ে ওপর থেকে নামাল। মইটা দেওয়ালের গায়ে লাগানো হল। লাদেনদার মই-টই লাগে না। সোজা দেওয়াল ধরে তরতর করে পাঁচিলের মাথায় উঠে গেল! তোজোর মনে হল, লাদেনদার লেজটাই যা নেই। নয়তো......। মুখ টিপে হেসেই ফেলল। লাদেনদা অবশ্য দেখতে পেল না।
পাঁচিলে বসে লাদেনদা বলল, আমি একা নামব। তোজো আর লালু, তোরা দুজন মই বেয়ে উঠে শুধু এপার থেকে দেখবি। পাঁচিল টপকে নামবি না। কী হয়, বলা তো যায় না। পান্তুকে তুলবি না। ছোট। পড়ে যেতে পারে। লাদেনদা পাঁচিল থেকে ঝুপ করে লাফ দিয়ে নীচে নামল। তোজো আর লালু মইয়ের মাথায় বসে তাকিয়ে রইল।
অদ্ভূত দৃশ্য। সেই লোমশ জানোয়ারটা কিছুটা দূরে চাতালে দু পা ছড়িয়ে বসে কিছু খাচ্ছে। হাতে দুটো কাগজের ঠোঙা। ও মা, এ কী দেখছে ওরা! জানোয়ারটার এক হাতে একটা আধখাওয়া বেগুনি। আরেক হাতের মুঠোয় মুড়ি! বাবুরা তাহলে মুড়ি-চপ খায়! লাদেনদাকে দেখে কোনও ভাবান্তর হল না তার। লাদেনদা দেখল, জানোয়ারটার পায়ের কাছে বলটা পড়ে আছে।
লাদেনদা এক পা এগোতেই হাত দেখিয়ে জানোয়ারটা তাকে নির্দেশের ঢঙে বলতে চাইল, ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকো। এক পা-ও এগবে না। তারপর লাদেনদা আর তোজোদের পিলে চমকে দিয়ে মানুষের ভাষায় জানোয়ারটা বলে উঠল, 'মুড়ি-বেগুনিটা আগে শেষ করতে দে। তারপর বল দিচ্ছি।' জানোয়ার কী করে মানুষের ভাষায় কথা বলছে! ওরা কি স্বপ্ন দেখছে? লাদেনদাও বাকহারা। ধীরে সুস্থে খাওয়া শেষ করে পা দিয়ে বলটা তার দিকে এগিয়ে দিল জানোয়ারটা। লাদেনদার হতবাক হওয়ার কারণ আঁচ করতে পেরেছিল সে। ততক্ষণে পাঁচিলের ওপর বসে থাকা তোজোরাও তার নজরে এসেছে।
জানোয়ারটা বলল, 'কৌতূহল হচ্ছে, জানতে চাস তো, কী করে কথা বলছি তোদের মতো? জানার চেষ্টা করে লাভ নেই। এখন এখান থেকে যা। আর সাবধানে শট মারবি। আমি কখনও না থাকলে কিন্তু বল ফেরত পাবি না।'
অতএব কী আর করা! তীব্র কৌতূহল সংবরণ করে ওরা চলে এল। লাদেনদা উঠে এল আগের মতোই দেওয়াল ধরে। তবে ফেরার সময় লাদেনদার নজরে পড়ল এক অদ্ভূত রকমের মাকড়শা। তার পায়ের কাছে পড়ে আছে। গেরস্ত বাড়িতে বসবাস করা মাকড়শার চেয়ে চেহারায় বড়। লম্বা লম্বা পা। চোখগুলো গোলাকার, রঙিন। পিটপিট করে তাকাল। এও এক রহস্য বটে।
তোজোর মনে শান্তি নেই। এ রহস্যের সমাধান করতেই হবে। ফিরে লাদেনদাকে নিয়ে তোজোরা মিটিংয়ে বসল, কী করা যায়। তোজোর পুলিশ মামাকে বলে ওই বাড়িতে রেড করাবে? না জানোয়ারটাকে পরদিন বুঝিয়ে রহস্য উদ্ঘাটনে কথা বলাতে রাজি করাবে? লাদেনদা বলল, না না, এখনই পুলিশের কাছে যাস না। কেসটায় আমাদের ওরা ঢুকতেই দেবে না। আমাদের একটা প্ল্যান করতে হবে। আমি ভাবছি। তোরাও ভাবতে থাক।
বিস্তর আলোচনার পর ঠিক হল, বিরাট পাঁচিলের যে প্রান্ত একটু নড়বড়ে আছে, সেখান থেকে ইট সরিয়ে সরিয়ে ও বাড়ির বাগানে ঢোকার রাস্তা বের করা হবে। সঙ্গে নেওয়া হবে লাদেনদার পোষা কুকুর বাঘাকে। আস্তে আস্তে বিকালে খেলার মাঝে মাঝে দু-তিনটে করে ইট সরিয়ে বেশ বড় একটা ফাঁক তৈরি করে ফেলল ওরা। জায়গাটা ভাঙা গাছের ডালপালা দিয়ে ঢেকে রাখা হল যাতে জানোয়ারটা কিছু বুঝতে না পারে। রবিবার সন্ধ্যা নামলে খেলা শেষের পরই অভিযান চালানোর প্ল্যান চূড়ান্ত হল।
শনিবার রাতে ঘুমই আসে না তোজোর। বইয়ে পড়া সেলফিস জায়ান্টের মতো কেউ কি ও বাড়িতে থাকে? না, জানোয়ারটা সেলফিস নয়, এটা পরিষ্কার। স্বার্থপর হলে ওদের বল ফেরত দিত না, পাঁচিল পেরিয়ে নামতে তো দিতই না। তোজোরা জানতে চায়, আর কে বা কারা ওখানে ঘাঁটি গেড়ে আছে। তোজো একদিন টিভির খবরে শুনেছিল, পাকিস্তানের আবোতাবাদ নামে একটা জায়গায় এমনই এক নির্জন বাড়িতে গা ঢাকা দিয়ে ছিল কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ওসামা বিন লাদেন। কে জানে, এ বাড়িতেও তেমন ভয়ঙ্কর কেউ আছে কিনা!
রবিবার। সন্ধ্যা নামতেই ওরা সবাই যে যার বাড়িতে বন্ধুর সঙ্গে একসঙ্গে পড়ার ছুতো দেখিয়ে বেরিয়ে সেই দেওয়ালের ভাঙা জায়গাটায় জড়ো হল। নেতৃত্বে লাদেনদা। বাঘাও আছে। পান্তু বাদে ৫ জন পা টিপে টিপে বাগানের ভিতর ঢুকল। সেখান থেকে বাড়ির পিছনের দরজা পর্যন্ত আগাছায় ভর্তি। লাদেনদা সঙ্গে টর্চ এনেছে। তবে সেটা না জ্বালিয়ে আবছা আলোতেই ওরা এগতে থাকল। মাটিতে ৫-৬টা মাকড়শা। চোখ পিটপিট করে ওদের দেখল, তবে কিছু করল না।
তোজোরা পিছনের দরজায় আলতো করে ঠেলা দিতে সেটা খুলে গেল। ক্যাঁ করে একটা শব্দ। খেয়েছে, জানোয়ারটা শুনে ফেলল না তো? সিঁড়িতে অন্ধকার।
ওরা সন্তর্পণে টর্চ জ্বেলে আস্তে আস্তে উপরে উঠল। দু-তিনটে ঘর। একটার ভিতর থেকে সামান্য আলো বাইরের বারান্দায় পড়ছে। তাহলে এ ঘরেই কেউ আছে। দরজার সামনে দাঁড়াল ওরা। লাদেনদা বললেই সবাই একসঙ্গে ঢুকবে। হঠাত, ঘরের ভিতর থেকে গম্ভীর কন্ঠে নির্দেশ এল, 'দরজা খোলা আছে। ভেতরে এস।' সর্বনাশ, ঘরের বাসিন্দা টের পেয়েছে ওদের উপস্থিতি! কিন্তু কী করে?
বাঘাকে নিয়ে ঘরে প্রথমে ঢুকল লাদেনদা। তারপর বাকিরা। একটা বিরাট ঘর। বড় বড় কাঠের আলমারি। তাতে হাজারটা মালপত্র ঠাসা। একটা বড় টেবিলের ওপর ভর্তি বইপত্র। একটা গ্লোব। কোনওমতে একটা হ্যারিকেন রাখা আছে।
টেবিলের ওপারে গদি আটা চেয়ারে বসে সেই একমুখ দাড়ি, আলখাল্লা পরা বুড়ো লোকটা যাকে তোজো ছাদ থেকে দেখেছিল। কিন্তু বাবুর মতো দেখতে জানোয়ারটা কোথায়? কৌতূহলবশতঃ তোজো ঘরের চারপাশে তাকাতেই সেই বুড়ো বলল, বুঢ্ঢাকে খুঁজছ তো? ওই যে দেখো, বিছানায় পড়ে ঘুমোচ্ছে। কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে খিদে পেলে। তোজোরা দেখল, সত্যিই জানোয়ারটা অঘোরে ঘুমোচ্ছে।
সাময়িক নীরবতা। বাঘার মতো দাপুটে কুকুরও ঘরে ঢোকার পর থেকে কেমন ঝিমিয়ে পড়েছে। বু়ড়োটা কি জাদু জানে? প্রথম মুখ খুলে লাদেনদা প্রশ্ন করল, আমরা যে এসেছি, ঘরে বসে বুঝলেন কী করে?
বুড়ো বলল, বাতাসে যে কোনও আগন্তুকের বার্তা পাই। বাগানে যে মাকড়শাগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলোর শরীরে সেন্সর বসানো আছে। কেউ বাগানে ঢুকলেই 'বিপ, বিপ' শব্দ করে আমায় জানান দেয় ওরা। সেই শব্দ ধরা পড়ে আমার হাতে পরা ঘড়িতে। শুনে ওরা থ।
তোজো বলল, জানোয়ারটা মানুষের মতো কথা বলে, চপ-মুড়ি খায়, তাজ্জব ব্যাপার। বুড়ো হেসে বলল, অবাক হচ্ছ? দুনিয়ায় অসম্ভব নয় কিছুই। আমার বিশ্বাস। মানুষ চাঁদে পা রেখেছে সেই কবে, টেস্ট টিউব বেবি জন্মাচ্ছে, মঙ্গলে অভিযান চলছে। আর জানোয়ারকে দিয়ে মানুষের মতো কথা বলানো যাবে না? চপ-মুড়ি খাওয়ানো যাবে না?
তবে কি বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা জানোয়ারটা আসলে মানুষ? ওকে জানোয়ারের চেহারা দেওয়া হয়েছে! বুড়ো বলল, কেন হবে না? এ নিয়ে কবে থেকে গবেষণা করছি! লাদেনদা বলল, কিন্তু মানুষ চেহারা বদলে জানোয়ার হলে যদি বিগড়ে যায়, হিংস্র হয়ে ওঠে?
বুড়ো জবাব দিল, আমি যদি বলি, চেহারা যা-ই হোক, ভিতরটাই আসল। চেহারায় মানুষ হয়েও জানোয়ারের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর এখন মানুষ! পরস্পরকে খুব হিংসে করে, স্বার্থে ঘা লাগলে খুন করতেও হাত কাঁপে না, জানোয়ারের মতোই আচরণ করে। তোজোর মনে হল, নেহাত ভুল কিছু উনি বলেননি।
বুড়ো বলল, আমার সঙ্গে এস। একটা জায়গায় তোমাদের নিয়ে যাব। বুড়ো ওদের ঘরের ভিতর একটা দরজার কাছে নিয়ে গেল। দরজায় গায়ে একটা সবুজ বোতাম টিপতেই সেটা খুলে গেল। একটা গুহার মুখ। লাদেনদার টর্চের আলোয় পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল বুড়ো। গুহাটা শেষ হয়েছে একটা খোলা মাঠে। একটা ছবির মতো ছোট্ট গ্রাম। ভোর হচ্ছে। মাঠের ধারে ছোট ছোট বাড়ি। বিড়াল, কুকুর, বাঁদর, হনুমান, নানা ধরনের পাখি, ভল্লুক, শিম্পাঞ্জি। ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিম্পাঞ্জির কাঁধে হনুমান, হনুমানের কাঁধে রঙিন পাখি। ছোট ছোট চেহারার মানুষ। গরু-বাছুরও আছে।
সবাই মিলে গান গাইছে,
চেহারায় হই মানুষ বা জন্তু
ভুলি না একটি সত্য কিন্তু
সবাই আমরা ঈশ্বর সন্তান
করি না হিংসা, দ্বেষ, অপমান
মিলে মিশে থাকি, খাই ভাগ করে
জীবন থাকুক আনন্দে ভরে।
বুড়ো বলল, তাহলে বুঝলে তো, একসঙ্গে বেঁচে থাকার আনন্দ। এরা চেহারায় জন্তু, কিন্তু মানুষের মতো কথা বলতে পারে। মানবিক। মিলেমিশে থাকে। একসঙ্গে খাটে, ভাগ করে খাবার খায়। তোজো জানতে চাইল, কিন্তু মানুষের মতো কথা বলার ক্ষমতা পেল কী করে এরা?
প্রশ্নটা শেষ হল সবে, হঠাত্ ওরা দেখল, কোথাও কিচ্ছু নেই। ভোজবাজির মতো সব ভ্যানিশ। ওরা সেই বুড়োর ঘরে দাঁড়িয়ে। কিন্তু বুড়ো নেই, জানোয়ারটা বিছানায় উঠে বসেছে। বলল, খুব খিদে পেয়েছে। রাতের খাবার খাব। তোমরা এখন এস। গুড নাইট।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন